মানব কল্যাণে বিজ্ঞান রচনা ১২ পয়েন্ট | The Daily Learn

মানব কল্যাণে বিজ্ঞান রচনা টি আপনারা খুব সহজেই মুখস্ত ও শিখতে পারেন সেই বিষয় বিবেচোনা করে লেখা নিচে পড়ুন। 

মানব কল্যাণে বিজ্ঞান রচনা ১২ পয়েন্ট

মানব কল্যাণে বিজ্ঞান রচনা

  • অথবা, মানব কল্যাণে বিজ্ঞানের অবদান 
  • অথবা, আধুনিক জীবনে বিজ্ঞান
  • অথবা, মানব কল্যাণে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি 
  • অথবা, দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান 
  • অথবা, দৈনন্দিন কাজে বিজ্ঞান। 
  • অথবা, বিজ্ঞান ও বর্তমান প্রযুক্তি 
  • অথবা,  সভ্যতার  অগ্রগতিতে বিজ্ঞানের অবদান 
  • অথবা, বিজ্ঞান ও আধুনিক সভ্যতা

সংকেত: ভূমিকা; বিজ্ঞানের সৃষ্টি; বিজ্ঞান সম্পর্কে ধারনা; দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান; কায়িক শ্রম লাগবে বিজ্ঞান; কৃষিকাজে বিজ্ঞান; উন্নত চিকিৎসায় বিজ্ঞান; শিক্ষাক্ষেত্রে বিজ্ঞান; তথ্য প্রদানে বিজ্ঞান; যোগাযোগ ক্ষেত্রে বিজ্ঞান; দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞানের অপকারিতা; উপসংহার । 

ভূমিকা: মানুষ একসময় গুহায় বাস করত কিন্তু । এখন মানুষ বিজ্ঞানে আশীর্বাদে আধুনিক জীবনেপদার্পণ করেছে, বসবাস করছে আকাশচুম্বী অট্টলিকায়। বিজ্ঞানের আশীর্বাদ পৃথিবী আজ মানুষের হাতের মুঠোয়। বিজ্ঞানের অবদানে পৃথিবী আজ আলো ঝলমলে; মানব জীবন সুখী সমৃদ্ধ আরাম-আয়েশ ও নিরাপদ।  মানব জীবনের কথা চিন্তা করে আদিমকালে গোপনে জীবন বিজ্ঞান চর্চা শুরু করা হয়েছিল।  বিজ্ঞানের কল্যাণে মানুষ আজ আকাশে বাতাসে উড়ে বেড়াচ্ছে। দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের বিশেষ অবদান রয়েছে। বিজ্ঞানের অগ্রগতির সাথে সাথে জাতীয় জীবনের উন্নতি অগ্রগতি ত্বরান্বিত হচ্ছে। বিজ্ঞানের অনুদানে মানুষের বিজয়ের কথা প্রকাশ পেয়েছে কবির কবিতায়। 

বিজ্ঞানের সৃষ্টি: প্রকৃতির অন্ধ শক্তির ওপর জয়ী হওয়ার প্রয়োজন নেই একদিন সৃষ্টি হয়েছিল বিজ্ঞানের। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মনিষীবৃন্দ মানুষের কল্যাণের জন্য ডুব দিয়েছিলেন প্রকৃতির অতলান্ত রহস্য সাগরে। সেই রহস্য উন্মোচন করে মানুষের প্রতিভা আবিষ্কার করছে প্রকৃতির কত গোপন সম্পর্ক শক্তি।  জলে-স্থলে আকাশ মানুষের আজ অপ্রতিহত গতি. বর্বর জীবনকে পশ্চাতে ধাওয়া করে বিজ্ঞানের কল্যাণে মানুষ আর সভ্যতার আলোকে উদ্ভাসিত সম্পদশালী। মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি, চিন্তাধারা, জীবনের স্বপ্ন ও কল্পনার আমূল পরিবর্তন ঘটিয়েছে বিজ্ঞান। 

বিজ্ঞান সম্পর্কে ধারনা: আদিমযুগে নিত্যান্ত প্রয়োজনের তাগিদে মানুষের অবচেতনে মনে বিজ্ঞানের সূত্রপাত ঘটেছিল।  তখন থেকেই মানুষের মানব কল্যাণের লক্ষ্যে বিজ্ঞানের  নিরন্তর গবেষণা চালিয়ে যেতে থাকে এবং সফল হয়।  সেই সাথে বিজ্ঞান মানুষের পরম বন্ধু হয়ে ওঠে। 

দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান: বিজ্ঞানকে  বাদ দিয়ে দৈনন্দিন জীবনে একটি মুহূর্তও ভাবা যায় না। আধুনিক জীবন বলতে আমরা বুঝি যে জীবন চিন্তা-চেতনা প্রগতিশীল, নিজের জীবন সম্পর্কে সচেতন এবং নতুনকে গ্রহণ করতে বদ্ধপরিকর।  তাইতো অন্ধকার গুহার পরিবর্তে আলোকপিয়াসী হয়ে মানুষ বিজ্ঞান সম্পর্কে ধারনা নিয়েছে সুদৃশ্য নিকেতন।  বিজ্ঞানের অবদানে মানুষ আজ কাঁচা মাংসের সিদ্ধ পরিবর্তে প্রেসার কুকারে  বা মাইক্রো ওভেনে রান্না করে খাদ্য খাচ্ছে।  লজ্জা-নিবারণ তৈরি করছেন নামিদামি ব্র্যান্ডের পছন্দের পোশাক।  মোটকথা বিজ্ঞানের সংস্পর্শে আজ আমাদের জীবন হয়েছে সহজ ও সুন্দর বিজ্ঞানের যাত্রা শুরুর প্রথম ধাপেই দেখা যায় বিদ্যুতের বিস্ময়কর অবদান তারপর এসেছে টেলিফোন, মুঠোফোন,টেলিভিশন,জেনারেটর, কম্পিউটার, ল্যাপটপ ইত্যাদি অতীতের গ্লানি চিহ্ন মুছে বিজ্ঞানের ছোঁয়ায় আজ আমরা আধুনিক। 

কায়িক শ্রম লাগবে বিজ্ঞান: মানব কল্যাণের কথা চিন্তা করেই প্রাচীন যুগে বিজ্ঞানের যাত্রা শুরু হয়েছিল আধুনিক বিশ্বে মানব জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের অবদান রয়েছে।  কায়িক শ্রম লাগবে ও বিজ্ঞানের অবদান অনস্বীকার্য। এক সময় অল্প কিছু উৎপাদন করতে মানুষকে অনেক পরিশ্রম করতে হতো। কিন্তু বিজ্ঞানের বদৌলতে শিল্প বিপ্লবের ফলে কল কারখানা স্থাপিত হয়েছে। এতে উৎপাদন বেড়েছে আর লাগব হয়েছে কায়িক শ্রম। 

কৃষিকাজে বিজ্ঞান: আদিম মানুষের জীবিকা অর্জনের একমাত্র পথ ছিল কৃষি। আমাদের মাতৃভূমি বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ।  বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষই কৃষি কাজের সাথে জড়িত।  কৃষি কাজের উন্নয়নের জন্য বিজ্ঞান বিশেষ ভূমিকা রেখেছে। দীর্ঘ সময় অনেক পরিশ্রম করে সনাতন পদ্ধতিতে লাঙ্গল জোয়াল গরু দিয়ে হাল চাষ এর পরিবর্তে চাষ করার জন্য বিজ্ঞান ট্রাক্টর আবিষ্কার করেছে। বেশি ফল উৎপাদনের জন্য রাসায়নিক সার ও অধিক ফলনশীল বীজ ফসলের ক্ষতিকর পোকার জন্য কীটনাশক ও আবিষ্কার বিজ্ঞানের অবদান।  তাছাড়া জমিতে সেচ প্রদান করা সহ বেশ কিছু কাজের জন্য যন্ত্র আবিষ্কার করেছে বিজ্ঞান।

উন্নত চিকিৎসায় বিজ্ঞান: চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের অবদান সবচেয়ে বেশি। বিজ্ঞানের কল্যাণে রাতারাতি আধুনিক চিকিৎসা উন্নতির শিখরে পৌঁছে গেছে। বিজ্ঞানের কল্যাণে আধুনিক মানুষ রোগহীন সুস্থ জীবন যাপন করছে।  ছোট-বড় নানা প্রকার রোগের হাত থেকে সহজেই মুক্তি পাচ্ছে।  রোগে আক্রান্ত হওয়ার আগেই মানুষ প্রতিরোধের ব্যবস্থা করছে যক্ষ্মা, হার্ট, কিডনি, হৃদপিন্ড ও ফুসফুস রাজস্থলীতে আক্রান্ত বিজ্ঞানের কাছে হার মেনেছে। তাছাড়া রোগ নির্ণয়ের জন্য এক্সরে, আলট্রাসনোগ্রাফি, এন্ডোসকপি, যন্ত্র আবিষ্কার করা হয়েছে। পৃথিবীর যেকোন প্রান্ত থেকে উন্নত চিকিৎসার পরামর্শ নিতে সৃষ্টি হয়েছে টেলিমেডিসিন পদ্ধতি ব্যবস্থা এমন নিঃস্বন্তান দম্পতির জন্য টেস্টটিউব বেবির ব্যবস্থা করেছে আধুনিক বিজ্ঞান।

শিক্ষাক্ষেত্রে বিজ্ঞান: শিক্ষা ক্ষেত্রে বিজ্ঞান বিশেষ অবদান রেখেছে।  কাগজ-কলম মুদ্রণ যন্ত্র শিক্ষাক্ষেত্রে এক বিস্ময়কর আবিষ্কার।  মুদ্রণ যন্ত্রের মাধ্যমে জ্ঞানী-গুণীর কথা  বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে।  মূল্যবান গ্রন্থ গুলি বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয় বিভিন্ন ভাষায় প্রকাশিত ও প্রচারিত হয়।  বর্তমান যুগে ঘরে বসে ইন্টারনেট থেকে শুরু করে সকল বই পাওয়া যায় তাছাড়া রেডিও-টেলিভিশন ক্যাসেটের মাধ্যমে শিক্ষা লাভ করা যায়। 

তথ্য প্রদানে বিজ্ঞান: বর্তমান যুগ তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে যেকোনো আলোড়িত ও আলোচিত ঘটনা মুহূর্তের মধ্যে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে।  কম্পিউটার ,টেলিফোন মুঠোফোন,সিমের, এসএমএস প্যাক ইন্টারনেট ইত্যাদি প্রযুক্তির মাধ্যমে পৃথিবীর যে কোনো স্থানে তথ্য আদান প্রদান করা হয়। তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে পৃথিবীর যেকোন প্রান্তে একে অপরের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। বিজ্ঞানের কল্যাণে তথ্য প্রদান তথ্য আদান-প্রদানের আরো উন্নত যন্ত্রপাতি আবিষ্কারের পথে। এই যন্ত্রের মাধ্যমে কথা বলার সময় অপর প্রান্তের মানুষের মনোভাব অনুভব করা যাবে। তাছাড়া ঘরে বসেই ইন্টারনেটের মাধ্যমে পত্রিকা পড়া সম্ভব হচ্ছে। আধুনিক বিজ্ঞান মানুষের জীবনে জটিলতাকে সকল ক্ষেত্রে সহজ থেকে সহজতর করে দিয়েছে। 

যোগাযোগ ক্ষেত্রে বিজ্ঞান: এক সময় মানুষ ছিল কেন্দ্রিক কোথাও যেতে হলে পায়ে হেঁটে যেতে হতো। কেননা, তখন কোন যানবাহনে ব্যবস্থা ছিলনা। কিন্তু, আধুনিক বিজ্ঞান যোগাযোগের ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন এনেছে। এ যুগে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাওয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র।  যানবাহনের মাধ্যমে মানুষ এখন জলে-স্থলে আকাশে গ্রহ উপগ্রহ ঘুরে বেড়াচ্ছে। স্থলপথে গাড়ি ট্রেন, জলপথে জাহাজ, আকাশ পথে বিমান, ভিনগ্রহে যেতে রকেট ইত্যাদি বিজ্ঞানেরই অবদান। 

দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞানের অপকারিতা:

বিজ্ঞানের স্পর্শ একদিকে যেমন মানুষের জীবন হয়েছে অর্থপূর্ণ সমৃদ্ধিশালী। বর্তমান সভ্যতার একটি কদর্য ও  ভয়ানক রূপ হলো পরমাণু অস্ত্রের ব্যবহার।  এ অস্ত্র ক্রমশ মানব সভ্যতাকে হুমকির দিকে ঠেলে দিচ্ছে। কম্পিউটার নামক মহাশক্তির আবিষ্কার ও সর্বক্ষেত্রে এর ব্যবহার প্রতিটি দেশে বাড়িয়ে দিয়েছে বেকারত্ব।  কম্পিউটার মাধ্যমে কোন সাইবার অপরাধী হ্যাকিং সহ নানা ধরনের অপরাধ করছে।  যার গতি রোধ করা প্রায় অসাধ্য সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে যেমন:ফেসবুক, টুইটা,র ভিডিও শেয়ারিং, সাইট ইত্যাদির মাধ্যমে ভুল তথ্য নিমিষেই ব্যবহারকারী কাছে পৌঁছে দেয় সহিংসতা সৃষ্টি করে। বৈজ্ঞানিক যন্ত্রচালিত গাড়ি গুলো নষ্ট করছে আমাদের পরিবেশ।  তাছাড়া বিশ্বের প্রতিটি দেশে তথ্য প্রযুক্তির ফলে সংঘটিত হয় বড় বড় ডাকাতি।  তবে সত্যিকার অর্থে এসবের জন্য আমরা বিজ্ঞানকে দায়ী করতে পারি না। বরং, প্রযুক্তির অপপ্রয়োগকারী মানুষেরাই এর জন্য দায়ী। 

উপসংহার: বিজ্ঞান অনুসন্ধানী, একদিকে জীবনে প্রবহমান ছন্দের মূল চালিকাশক্তি বিজ্ঞানের একের পর এক আবিষ্কারে মানুষ স্তম্বিত হচ্ছে। শহর জীবনে বিজ্ঞানের প্রভাব বিস্তার করেছে। গ্রামীণ জীবনধারায় ঠিক সেভাবে সম্ভব হয়নি। তাই সচেতন জনসাধারণের প্রতি কর্তব্য গ্রামীণ জীবন দাঁড়াতেও বিজ্ঞান এর বিস্তৃতি ক্ষেত্র প্রস্তুত করা। কেননা, বাংলাদেশের হৃদপিণ্ড গ্রাম বাংলায় বিজ্ঞান এর যথার্থ প্রয়োগই পারে তার উদ্ভাবনী শক্তিকে জাদুস্পর্শে সমৃদ্ধ করতে।

আরো পড়ুন: মোবাইলে নগদে একাউন্ট খোলার নিয়ম জেনে নিন

অনুসন্ধান ট্যাগ:

  • মানুষের মঙ্গল নিয়ে বিজ্ঞান লেখা
  • মানুষের কল্যাণে বিজ্ঞান
  • দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান
  • মানব কল্যাণে বিজ্ঞানের অবদান।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url