স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী রচনা | দি ডেইলি লার্ন
স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী রচনা এবং গৌরবের ৫০ বছর স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী সম্পর্কে জানুন। আপনাদের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে সুবর্ণ জয়ন্তী কী ? সুবর্ণজয়ন্তী হলো ৫০ তম বার্ষিকী যেমন ১৯৭১ সাল থেকে ২০২২ সাল আমাদের স্বাধীনতার ৫০ বছর যাকে সুবর্ণজয়ন্তী বলা হয়। চলুন জেনে নেই স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী রচনা সম্পর্কে।
স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী রচনা
সংকেত: ভূমিকা ;স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস; স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী; স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন ; স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা; উপসংহার।
স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী রচনা - এখান থেকে শুরু
ভূমিকা : এক সাগর রক্তের বিনিময়ে এবং দীর্ঘদিনের সংগ্রামী চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ৩০ লাখ শহীদের আত্মার বিনিময় এবং চার লাখ বোনের ইজ্জত মান সম্মান হারানো সর্বোপরি নয় মাসের রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয়েছে এই স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। ৭১-এর সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রাম ছিল বিশ্বের মধ্যে আধুনিক অস্ত্রে সুসজ্জিত বাহিনীর বিরুদ্ধে দেশ প্রেমিক নিরস্ত্র জনতার। যার জন্য স্বাধীনতার সংগ্রাম আমাদের পৌঁছে দিয়েছে গৌরবের স্বর্ণশিখরে।
স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস: বাংলাদেশে প্রায় দু'বছর বোনিয়া ইংরেজদেড় দাসত্ব করে। ১৯৪৭ সালে মুক্ত হলে পাকিস্তানের দুঃশাসনের খপ্পরে গিয়ে পড়ে। ফলে নব্য ঐপনিবেশিক শোষণে পুনরায় শোষিত হতে থাকে। স্বৈরাচারী পাকিস্তানি শাসকদের বিমাতাসুলভ আচরন বাঙ্গালীদের মনে ক্ষোভ দানা বাঁধতে শুরু করে। পচ্ছিমা শাসকগোষ্ঠী এদের দাবি রাখার জন্য যত চেষ্টা করতে থাকে, যত আত্যচার করতে থাকেন বাঙালি ততোই সোচ্চার হতে থাকে। এর ফলস্বরূপ৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ৬৬-এর ছয় দফা আন্দোলন, ৬৯ এর- এর গণঅভ্যুত্থান এবং সর্বশেষ ১৯৭১ এর স্বাধীনতা যুদ্ধ সংঘটিত হয়। তৎকালীন পাকিস্তানের সামরিক শাসক জেনারেল বাঙ্গালীর সাথে বেইমানি করে. ১৯৬৯-এর নির্বাচনে পরিষদ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করল ও ক্ষমতা হস্তান্তরে তালবাহানা শুরু করে।
স্বাধীনতার কখনোই সহজলভ্য নয়। কেউ কাউকে স্বাধীনতা দেয় না তাকে ছিনিয়ে নিতে হয়। স্বাধীনতা আমাদের জন্যই স্বাধীনতা অর্জন ছিল অত্যন্ত কঠিন। ১৯৭১ সালের 26 শে মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। সাথে সাথে সারাদেশের শুরু হয়ে যায় স্বাধীনতার জন্য সশস্ত্র সংগ্রাম। কুষ্টিয়ায় গঠিত হয় স্বাধীন বাংলার সরকার প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীনের নির্দেশে জেনারেল আতাউল গনি ওসমানী পরিচালনা রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়। মেজর জিয়াউর রহমান, খালেদ মোশাররফ, কে এম শফিউল্লাহ মেজর জলিল, কর্নেল তাহের, মেজর রফিকুল ইসলাম, কাদের সিদ্দিকীসহ বাঙালির মুক্তি সংগ্রামের পর ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর লাখো প্রাণের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়। যার ফলশ্রুতিতে আজ স্বাধীন গৌরবের ৫০ বছর স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী।
স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী রচনা'র-উদযাপন-বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা সম্পর্কে পড়ুন
স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী: এদেশের মানুষ পাকিস্তানি শাসকের বিরুদ্ধে 26 মার্চ থেকে লড়াই শুরু করে এবং ১৬ ডিসেম্বর ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে তাদের অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছায়। তাই এই স্বাধীনতা চরম পরম বিস্ময়। ১৯৯৫ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালন হলো। স্বাধীনতা এবার পূর্ণ যৌবনে পদার্পণ করল। তাই এবারকার সুবর্ণজয়ন্তী গুরুত্বপূর্ণ এবং অর্থবহ। অসংখ্য মানুষের দীর্ঘদিনের সংগ্রাম আত্মদানের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীনতা দিবস অত্যন্ত তাৎপর্যমণ্ডিত। স্বাধীনতা সংগ্রাম ছিল মূলত অন্যায়ের বিরুদ্ধে শোষণের বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, ধর্মনিরপেক্ষতার পক্ষে নয়। পুঁজিবাদী ব্যবস্থার পরিবর্তন করে সুষম বন্টন ব্যবস্থা দুর্নীতির বিরুদ্ধে ন্যায়নীতির পক্ষে সর্বোপরি শোষণ মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার।
স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন : প্রতি বছর ঘুরে ঘুরে স্বাধীনতা দিবস আমাদের দুয়ারে এসে উপস্থিত হলেও সুবর্ণ জয়ন্তী প্রতি বছর আসে না। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী এই সরকারি ছুটি পালিত হয় সরকারি-বেসরকারি প্রত্যেক ভবনের শীর্ষে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উড়ানো হয়। রাষ্ট্রপ্রতি এবং প্রধানমন্তীর বক্তব্য ও বিশেষ ব্যক্তিদের বক্তব্য বিশেষ কর্মসূচির মাধ্যমে শুরু হয়। এই দিনে স্কুল-কলেজ বিদ্যালয় বিশেষ কর্মসূচি বিভাগীয় শহরের স্টেডিয়ামে শিশু সমাবেশ সেনাবাহিনীর কুচকাওয়াজ শহীদ মিনার ও জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘ্য বিশেষ প্রার্থনা করা হয় তাছাড়া সারা বাংলায় সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে মিছিল বিজয় মেলা শোভাযাত্রা খেলাধুলা বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে যথাযোগ্য মর্যাদায় স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপিত হয়ে থাকে। স্বাধীনতা এক অমূল্য সম্পদ মীর মশাররফ হোসেনের ভাষায় বলা যায়, "রাজা কইলো রাজা পাওয়া যায়, কিন্তু স্বাধীনতার ধনে একবার বঞ্চিত হলে সহজে সে মহামণির আর দেখা যায় না। বহুমূল্য রত্ন আর হস্তগত হয় না। স্বাধীনতার সূর্য একবার অস্তমিত হলে তা পুনরুদ্ধার হওয়া বড়ই ভাগ্যের কথা। "
স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা: স্বাধীনতার পরে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ এর অর্থনৈতিক অবস্থান থেকে শুরু করে প্রত্যেকটি খাতের অবস্থা ছিল অনেক ভয়াবহ। স্বাধীনতার রজত জয়ন্তী শেষ করে স্বাধীনতার ৫০ বছরে আজ স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে অর্থনৈতিক অবকাঠামো থেকে শুরু করে প্রত্যেকটি কাঠামোতে উন্নয়ন করা তা ছিল বড় একটা চ্যালেঞ্জের বিষয়। কিন্তু,কোনো ভাবেই এ দেশকে অর্থনৈতিক, সামাজিক , রাজনৈতিক এবং দেশের উন্নয়নে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ কে কোনো ভাবেই দাবিয়ে রাখতে পারেনি। আজ অর্থনৈতিক , রাজনৈতিক , উন্নয়নশীল দেশের রোল মডেল হিসাবে বিশ্বের বুকে বাংলাদেশের নাম আর কারো অজানা নেই। এই স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে বাংলাদেশের উন্নয়ন বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে।
দাঁড়িয়ে আছে বাংলার স্বপ্নের পদ্মা সেতু , মেট্টোরেল , রুপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রর মতো স্থাপনা। বিশ্বের প্রতিটি দেশের মতো বাংলাদেশ ও ৫৭ তম রাষ্ট্র হিসাবে মহাকাশে উৎক্ষেপণ করেছে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে যা ছিলো গৌরবের এবং ইতিহাসের।
উপসংহারঃ ত্রিশ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ এর বিনময়ে আজ আমাদের এই স্বাধীনতা। আর স্বাধীনতা পাওয়ার মাধ্যমেই ৫০ বছর পেরিয়ে আমাদের সুবর্ণ জয়ন্তী। তাই সব ভেদাভেদ ভুলে প্রত্যেক এর মাঝে দেশপ্রেম নিয়ে দেশের কল্যাণকর কাজে আত্মনিয়োগ করার অঙ্গীকার করি। তাহলেই আমাদের এই স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী সার্থক হয় উঠবে। তাছাড়া স্বাধীনহিসাবে মর্যাদালাভের জন্য জাতীয় অগ্রগতি অপরিহার্য। এই সুবর্ণ জয়ন্তীতে স্বাধীনতার মূলমন্ত্র জাতীয় চেতনায় আবার প্ৰজ্বলিত হোক এবং শহীদের আত্মত্যাগের স্বপ্ন সফল বাস্তবায়িত করতে দেশের মানুষকে উৎসাহিত করার দৃঢ় চেতনায় দেশ গড়া এবং অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে কাজ করার বজ্রপথই হোক স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর স্লোগান।
আরো পড়ুন: রচনা মানব কল্যাণে বিজ্ঞান
সার্চ ট্যাগ
- স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী রচনা
- স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধু রচনা pdf
- স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী রচনা pdf
আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url