ভোক্তা কি ? ভোক্তা আচরণ কি ও ভোক্তা আচরণের বৈশিষ্ট্য সমূহ

ভোক্তা কি ? ভোক্তা আচরণ কি ও ভোক্তা আচরণের বৈশিষ্ট্য সমূহ মূলত একজন ভোক্তা পণ্য ক্রয় এর ক্ষেত্রে উপাদান প্রভাবিত হয়। নিচে ভোক্তা কি ? ভোক্তা আচরণের বৈশিষ্ট্য সমূহ ও ভোক্তা আচরণ কি সম্পর্কে আলোচনা করা হলো। 

ভোক্তা কি ? ভোক্তা আচরণ কি ও ভোক্তা আচরণের বৈশিষ্ট্য সমূহ

ভোক্তা কি ?

ভোক্তার আচরণ খুবই বিচিত্র। পণ্যসামগ্রী বা সেবাকর্মের  চূড়ান্ত ক্রেতার ক্রেতাই ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য পণ্য ও সেবা ক্রয় করে থাকেন। ব্যক্তিগত ব্যবহার বাজারজাতকরণের ভাষায় 'ভোগ' নামে পরিচিত। যে সকল ব্যক্তি পণ্য সামগ্রী ব্যক্তিগতভাবে ক্রয় বা ব্যবহার করে তাকে ভোক্তা বলে। পণ্যসামগ্রী বা সেবাকর্ম ক্রয় কালে চূড়ান্ত ভোক্তার ক্রয় আচরণের যে প্রকাশ ঘটে তাই ভোক্তার আচরণ।

ভোক্তা আচরণ কি ?

ভোক্তা আচরণের সংজ্ঞা: নির্দিষ্ট কোনো পণ্য বা সেবা অর্জন ব্যবহার বা পরিত্যাগকরণের সিদ্ধান্ত গ্রহণে যে সমস্ত বিষয় সরাসরি প্রভাব সৃষ্টি করে সেগুলোর সমষ্টিকেই ভোক্তার আচরণ বলে।

ভোক্তা আচরণের বৈশিষ্ট্য সমূহ :

ভোক্তার আচরণ হচ্ছে কতিপয় কাজের সমষ্টি যা দ্বারা পণ্য বা সেবা ক্রয় সিদ্ধান্ত প্রভাবিত হয় বিভিন্ন ধরনের ব্যাহিক  ও অভ্যন্তরীণ উদ্দীপক ভোক্তা আচরণ করে ভোক্তা ক্রয়-বিক্রয় করবে কিভাবে ক্রয় করবে কোথা থেকে ক্রয় করবে ইত্যাদি বিষয়ের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ফলে বেশকিছু বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায় কতিপয় বৈশিষ্ট্য নিম্নে আলোচনা করা হল:

১. প্রেষণাগত আচরণ : ভোক্তার আচরণ দ্বারা পরিচালিত হয় জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত একজন ব্যক্তি কোনো না কোনো অভাব দ্বারা তাড়িত হয় এভাবে মেটানোর জন্য ব্যক্তি সর্বদা সচেষ্ট থাকে একটি চাহিদা মিটে গেলে আরেকটি চাহিদা অনুভব করে চাহিদা মেটানোর ক্ষেত্রে প্রেষণার ব্যক্তিকে তারিত  করে তাই ভোক্তা আচরণ কে প্রেষণাগত আচরণ বলা যায়।

২.শিক্ষালব্ধ আচরণ : একজন ব্যক্তির আচরণ এর প্রতিটি শিক্ষালব্ধ অভিজ্ঞতার প্রত্যুত্তর। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে ব্যক্তির আচরণের পরিবর্তন ঘটে অর্থাৎ শিক্ষা আচরণের পরিবর্তন করে। 

৩.বিভিন্ন কার্যক্রমের মধ্যে সমন্বয়:  ক্রয়ের পূর্বে সম্পর্কে জানতে চেষ্টা করে পণ্যের  প্রয়োজনীয়তা নির্ধারণ পণ্য  তথ্য অনুসন্ধান সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে বিকল্পসমূহ প্রয়োজনীয় পণ্য নির্ধারণ করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ইত্যাদি বিভিন্ন কাজ সম্পাদন করতে হয়।

৪. সিদ্ধান্ত প্রক্রিয়া: ভোক্তার আচরণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ার ফলে সৃষ্টি হয়। অর্থাৎ কোনো পণ্য বা সেবা ক্রয় করবে সে সম্পর্কে ব্যক্তি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এরূপ এরূপ ক্ষেত্রে ভোক্তা একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকে। যেমন গাড়ি ক্রয় ক্ষেত্রে ক্ৰেতা গাড়ি বিভিন্ন কার্যকর বৈশিষ্ট্য তথা: গাড়ির ইঞ্জিনের শক্তি, বহনক্ষমতা, প্রতি লিটার জ্বালানি তেলে চলার ক্ষমতা; ব্যাহিক সৌন্দর্য, আভ্যন্তরীণ সাজসজ্জা অসুবিধা ইত্যাদি বিবেচনা করে।

৫.মানসিক প্রক্রিয়া: ভোক্তা আচরণ কতিপয় আত্ম:ক্রিয়াশীল পদক্ষেপের সমষ্টি অর্থাৎ ভোক্তার ক্রয় সিদ্ধান্ত প্রক্রিয়া দ্বারা প্রভাবিত হয়. যেমন আবেগপ্রসূত নান্দনিক আনন্দ অথবা আনন্দদায়ক অনুভূতি ইত্যাদি। তাই ভোক্তার আচরণ কে মানসিক প্রক্রিয়া বলা যায়। 

সম্পূর্ণ: ভোক্তা আচরণের বৈশিষ্ট্য সমূহ গুলো পড়ুন।

৬ .সময় ও জটিলতার কারণে আচরণের ভিন্নতা: সময় ও জটিলতার কারণে ভোক্তার আচরণ এর ভিন্নতা দেখা যায়। একজন ব্যক্তির আচরণ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরনের হয় এক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় বিবেচ্য। যেমন- জরুরি প্রয়োজনের ক্ষেত্রে ক্রেতা পণ্যমূল্য বিবেচনা করে না।,যে কোন মূল্যই পণ্যটি ক্রয় করে তাছাড়া পণ্য ব্যবহারের জটিলতা ভোক্তার আচরণ এর প্রভাব সৃষ্টি করে।সহজে ব্যবহারযোগ্য পণ্য ক্রয় ভোক্তার তেমন কোনো বিষয় বিবেচনা করে না। কিন্তু, জটিল ধরনের পণ্যের ক্ষেত্রে পণ্য সক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় বিবেচনা করে পণ্যটি ক্রয় করতে চায়। যেমন-চাল ক্রয়ের ক্ষেত্রে গুনাগুন বিবেচনা করলেও একটি রেফ্রিজারেটর এর ক্ষেত্রে ব্যবহার উপযোগিতা বিবেচনা করে।

৭. বিভিন্ন ভূমিকা পালন: একজন ব্যক্তি বিভিন্ন ধরনের ভূমিকা পালন করে। ভোক্তা  কখনো কখনো প্রভাব সৃষ্টিকারী (influencer), কখনো ক্রেতা (Purchaser), অথবা ব্যবহারকারী (user) হিসেবে ভূমিকা পালন করে। বিভিন্ন ভূমিকায় ব্যক্তির আচারণ হয় ফলে আচারনের একটি প্রক্রিয়াভিত্তিক কাজ বলা হয়। 

৮. বিভিন্ন উপাদানের প্রভাব: বিভিন্ন ধরনেরবাহ্যিক ও  অভ্যন্তরীণ উপাদান দ্বারা ভোক্তার আচরণ প্রভাবিত হয়। বাহ্যিক উপাদান তথা- সংস্কৃতি , সামাজিক শ্রেণী, পরিবার, নির্দেশক দল, বাজারজাতকরণ পরিবেশ ইত্যাদি। এছাড়াও অভ্যন্তরীণ উপাদান হচ্ছে ব্যাক্তির শিক্ষণ, বিশ্বাস, মূল্যবোধ, প্রত্যক্ষণ, মনোভাব ইত্যাদি।  

৯. ভোক্তা আচরনে ভিন্নতা : বিভিন্ন ধরনের ভোক্তা বিভিন্ন ধরনের আচরণ প্রকাশ করে। কোন ভোক্তাপণ্য  ক্রয়ের পূর্বে মূল্য যাচাই করে দেখে। কোনো ক্রেতা পণ্যের মান বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। কোন কোন ক্রেতা বিক্রয় প্রসার কার্যক্রম দ্বারা প্রভাবিত হয়।  ফলে ভোক্তা ভেদে ক্ৰেতার আচরণ ভিন্ন হয়। 

১০. উদ্দেশ্যভিত্তিক আচরণ: ভোক্তা আচরণ অনেক ক্ষেত্রে উদ্দেশ্য ভিত্তিক হয়।  অর্থাৎ নির্দিষ্ট লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য ভোক্তার আচরণ ভিন্ন হয়। যেমন তৃষ্ণার্ত ব্যক্তির পানির জন্য আচরণ এবং গাড়িতে তার আচরণ ভিন্ন হবে। 

পরিশেষে বলা যায়, ভোক্তা আচরণের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী বাজারজাতকরণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা প্রয়োজন সঠিক সিদ্ধান্ত বাজারজাতকরণ ক্ষেত্রে সফলতা অর্জনে সহায়ক। 

আরো পড়ুন: ক্রেতা ও ভোক্তার মধ্যে পার্থক্য গুলো কি কি

সার্চ ট্যাগ 

  • ভোক্তা কি
  • ভোক্তা কাকে বলে
  • ভোক্তা আচরণ কি
  • ভোক্তা আচরণের বৈশিষ্ট্য সমূহ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url