আমাদের গ্রাম রচনা | দি ডেইলি লার্ন
আমাদের গ্রাম রচনা : সবুজে ঘেরা, আমাদের গ্রামটি প্রকৃতি এবং সম্প্রদায়ের সুরেলা মিশ্রণের প্রমাণ হিসাবে প্রকৃতির রূপময় সৌন্দর্য্য এক রূপসী কন্যার মতো। এর বৈচিত্র্যময় জনসংখ্যা এবং অনন্য বৈশিষ্ট্য সহ, আমাদের গ্রাম সমৃদ্ধ। নিম্মে আমাদের গ্রাম বাংলা প্রবন্ধটি রয়েছে -
রচনা সংকেত: ভূমিকা; গ্রামটির নামকরণ; অবস্থান; অধিবাসী; প্রাকৃতিক দৃশ্য; উৎপন্ন দ্রব্য; বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান; যোগাযোগ ব্যবস্থা; সামাজিক ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা; উপসংহার।
আপনি আরও বাংলা রচনা পড়তে পারেন এবং সাথে ইংরেজি রচনা, প্রতিবেদন, আবেদন পত্র ও অনন্য।
আমাদের গ্রাম রচনা | দি ডেইলি লার্ন
ভূমিকা : আটষট্টি হাজার গ্রাম সমৃদ্ধ আমাদের এই বাংলাদেশ। এদেশের গ্রাম বাংলা সৌন্দর্য বরাবরই বিদেশীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে আসছে। সৌভাগ্যক্রমে আমিও একটি গ্রামের বাসিন্দা আমাদের গ্রামটি তার সমৃদ্ধি ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কারণে এলাকায় বেশ আলোচিত আমাদের গ্রামখানা দিকে তাকালেই কবি বন্দে আলী মিয়ার কবিতাটির কথা মনে পড়ে যায়।
"আমাদের গ্রামখানি ছবির মতন
মাটির তলায় এর ছড়ানো রতন।"
মাটির তলায় এর ছড়ানো রতন।"
গ্রামটির নামকরণ : আমাদের গ্রামটির নাম দেউলিয়া খুব সম্ভব 'দেউলিয়া' শব্দ থেকে দেউলি কথাটি এসেছে। শোনা যায় কিছু লোক দেশের উত্তরাঞ্চল থেকে এই অঞ্চলে আগমন করে। তাদের দেশে তাদের সহায় সম্বল কিছুই ছিল না যাকে ভবগুরে। তারা মধুমতি পারে পলি সমৃদ্ধ এই অঞ্চলটি তৎকালীন জমিদারের কাছ থেকে বসবাসের জন্য কামনা করে জমিদারি দেউলিয়া লোকগুলোর প্রতি সদায় আচরণ করেন এবং তাদের আর্জি পূরণ করেন। সেই থেকে তাদের বসবাসের স্থান চিহ্নিতকরণের জন্য এই এলাকাটির নাম দেউলী হয়। শোনা যায় এখানকার জমি আবাদ করে তারা জমিদারকে প্রচুর খাজনা যুগিয়েছিলেন।
আপনি আরও ইংরেজি রচনা পড়তে পারেন এবং সাথে প্রতিবেদন, আবেদন পত্র ও অনন্য।
অবস্থান : গ্রামটি মাগুরা জেলার মোহাম্মদপুর উপজেলার পলাশবাড়ী ইউনিয়ন এ বিখ্যাত মধুমতি নদীর পশ্চিম তীরে অবস্থিত উত্তর পাশে রয়েছে বিরাট বিল শুষ্ক মৌসুমে যা সোনা ফলায় দক্ষিনে কালীগঞ্জ বাজার এবং পশ্চিমে ঝামা বাজার গ্রামটিকে পেঁচিয়ে রয়েছে নদী শাসনের বেরিবাদ যা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যোগাযোগের জন্য বিশেষ ভূমিকা রেখে চলছে। আমাদের গ্রামটির দৈর্ঘ্য ৩ কিলোমিটার প্রস্থ ২ কিলোমিটার।
অধিবাসী : এখানে প্রায় ৩ হাজার লোকের বাস এদের শতকরা ৯০ জন মুসলমান বাকিগুলো হিন্দু অধিবাসীদের অধিকাংশই কৃষিজীবি অন্য পেশার লোক যেন রয়েছে তাদের মধ্যে ব্যবসায়ী, শিক্ষক, উকিল, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, জেলে, কামার, কুমার, সুতার ও সরকারি কর্মচারী উল্লেখযোগ্য বিকশিত মাগুরা প্রকল্পের বাস্তবায়নের ফলে আমাদের গ্রামে নিরক্ষরতার ছায়া আর নেই।
প্রাকৃতিক দৃশ্য: প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য আমাদের এই গ্রামের খুবই সুখ্যাতি রয়েছে। ষড়ঋতুর বৈচিত্র গ্রামখানি বিভিন্ন রূপে রূপময় হয়ে ওঠে। গ্রীষ্মের খরতাপে, বর্ষার মেঘমেদুর শ্যামল ছায়ায়, শরতের কাশফুলের হাসিতে, হেমন্তের সোনালী ফসলে, শীতের কুয়াশা কুহেলিকায় এবং বসন্তের ভুবন ভুলানো হাসিতে গ্রামটি অভিনব হয়ে ওঠে। মধুমতির বুকের পাল তোলা ডিঙ্গি থেকে ভেসে আসে ভাটিয়ালি গানের সুর, উত্তরের বিল থেকে উড়ে যাওয়া বেরিবাদের ওপর দিয়ে ছুটে চলা বাস ট্রাকের হর্ন, সন্ধ্যার রূপালী চাঁদের আলো আমাদের গ্রামখানিকে মোহনীয় করে তুলেছে পল্লী বিদ্যুতের কল্যাণ এ নিসি না আসতেই হেসে ওঠে সারা গ্রাম আর তার ঐ ছায়া মধুমতি নদী জলে উদ্দীপফলিত হয়ে স্বপ্নের তাজমহলের মত শোভা পায়।
উৎপন্ন দ্রব্য: ফুলে ফুলে ভরা আমাদের এ গ্রাম। এ গ্রামের প্রধান উৎপন্ন দ্রব্যের মধ্যে ধান, পাট, ডাল, সরিষা, তিল এবং বিভিন্ন প্রকার শাকসবজি উল্লেখযোগ্য খাল বিলে প্রচুর মাছ পাওয়া যায় হাঁস মুরগি প্রচুর ডিম দেয়। গাভী দুধ অকাতরে বাগিচায় আম, জাম, নারকেল, কলা, সুপারি, তাল, পেয়ারা প্রগতি ফল প্রচুর জন্মে। এক কথা আমাদের গ্রামটি স্বনির্ভর গ্রাম। সাধারণ জীবন যাপনের জন্য কারো কাছ থেকে আমাদের হাত পাততে হয় না।
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান : আমাদের গ্রামে তিনটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দুটি রেজিস্টার্ড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় দুটি বড় মসজিদ, একটি ফাজিল মাদ্রাসা ও দুটি ফোরকানিয়া মাদ্রাসা রয়েছে। গ্রামে রয়েছে একটি দাতব্য চিকিৎসালয়, একটি ডাকঘর একটি কমিউনিটি সেন্টার, গ্রাম একটি বাজার রয়েছে বাজারটি স্থায়ী দোকান গড়ে সমৃদ্ধ। প্রতিদিন সকাল বিকাল সেখানে সব রকম জিনিসপত্র কেনাবেচা কেনা হয়।
যোগাযোগ ব্যবস্থা: বেরিবাদের উঁচু রাস্তা ছাড়াও সদর উপজেলা ও অন্যান্য ইউনিয়নের সাথে যোগাযোগের জন্য এনজিও সংস্থা কেয়ার নির্মিত দুটি পাকা রাস্তা আমাদের গ্রামের উপর দিয়ে গেছে রাস্তায় সাইকেল, মোটরসাইকেল, বাস প্রকৃতি যানবাহন চলাচল করে এখান থেকে বিকাশ পরিবহনের মাধ্যমে সরাসরি রাজধানীতে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
সামাজিক ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা: আমাদের গ্রামটি সামাজিক ও প্রশাসনিক ব্যবস্থার শক্তি সত্যিই চমৎকার। নিরক্ষতার অভিশাপ থেকে গ্রামটি মুক্ত হয়। গ্রাম থেকে কুসংস্কারের অন্ধকার চিরতরে দূরীভূত হয়েছে। গ্রামটির প্রশাসনিক ব্যবস্থা এতই মজবুত যে গ্রামে চুরি ডাকাতি ও হত্যার দর্শনের কথা কল্পনাই করা যায় না।
উপসংহার: আমাদের গ্রামটি একটি আদর্শ গ্রাম হিসেবে সুখ্যাতি কুরাচ্ছে। বর্তমানে সরকারের একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের আওতায় গ্রামের বাড়ি সম্পূর্ণ হয়ে উঠেছে। প্রতিদিন দূরদূরান্ত থেকে বিভিন্ন পেশার লোকজন আমাদের গ্রামে বেড়াতে আসে। কারণ গ্রামটি আমাদের কাছে খুবই পবিত্র স্থান। ভালবাসার ধন। তিলে তিলে শ্রম সাধনার বিনিময়ে আমরা একে গড়ে তুলেছি। এ গ্রামে জন্মগ্রহণ করতে পেরে আমরা ধন্য।
আপনি আরও পড়তে পারেন এবং সাথে প্রতিবেদন, আবেদন পত্র ও অনন্য।
আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url