ম্যালেরিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার | দি ডেইলি লার্ন
ম্যালেরিয়া রোগের লক্ষণ : জীবাণু তত্ত্ববিজ্ঞান বলেন 'প্লাজমোডিয়াম' নামক একপ্রকার প্রটোজোয়া মানবদেহে ম্যালেরিয়া রোগ সৃষ্টি করে। এই রোগের প্যারা সাইট গুলি ম্যালেরিয়া রোগীর শরীরে বিদ্যমান থাকে। স্ত্রী জাতীয় এনোফিলিস মশা আক্রান্ত রোগীকে দংশন করলে ঐ জীবাণু মশার দেহে প্রবেশ করে। অবশেষে যখন সুস্থ মানব দেহে দংশন করে তখন ও সুস্থ ব্যক্তির রক্তের বিভিন্ন লোহিত কণিকার সাথে রোগ জীবাণু মিশিয়া বংশবৃদ্ধি করে এবং ১০-১২ দিনের মধ্যে সুস্থ ব্যক্তি ম্যালেরিয়া রোগে আক্রান্ত হয়। একটা সময় বাংলাদেশে ও ভারতে এই রোগের প্রাদুর্ভাব খুব বেশি ছিল তবে আজকাল বহুলাংশে সে ম্যালেরিয়া কমে গিয়েছে।
স্বাস্থ্য টিপস সম্পর্কিত আরও ফ্রিল্যান্সিং, ইতিহাস এবং দৈনিক তথ্য জানতে পড়তে পারেন।
ম্যালেরিয়া রোগের লক্ষণ
- রোগী শীত শীত অনুভব করে হাত পা ঠান্ডা হয়। প্রবল কম্প দিয়ে জ্বর আসে। রোগী এত বেশি কাপিতে থাকে যে লেপ ও কম্বল দিয়া রোগীর সমস্ত শরীর চাপা দিল কম্পন বন্ধ হয় না এবং মাথাব্যথা থাকে বেদনা হয় এমন অবস্থা বেশ কিছুক্ষণ স্থায়ী হয়।
- দেহের তাপমাত্রা দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং পরিশেষে ১০৩-১০৪ ডিগ্রি হয়, রোগী তখন প্রলাপ বগিতে থাকে উত্তাপ বৃদ্ধি পাইবার পর রোগী গরম অনুভব করে, কম্পন অল্প হয় এবং নারীর স্পন্দন দ্রুত হয়। রোগী তখন তার শরীরের কাপড় রাখতে অস্বস্তি বোধ করে।
- জ্বর ছাড়িবার সময় রোগীর ভীষণ ঘাম হয় এবং পর্যায়ক্রমে তাপমাত্রা কমতে থাকে।
ম্যালেরিয়া জ্বরের তিনটি অবস্থা :
১. শীত বস্তা ২. উষ্ণবস্থা ৩.ঘমাবস্থা
ম্যালেরিয়া জ্বরের সচরাচর এই তিনটি অবস্থা দেখা যায়। অর্থাৎ শীত করিয়া জ্বর আসা, তারপর শরীর উষ্ণ হইয়া গাএতাপ বৃদ্ধি পাওয়া, এবং ঘাম দিয়ে জর একেবারে ছাড়িয়া যাওয়া। জ্বরে অত্যাধিক পিপাসা হয় এই তিনটি লক্ষণ স্পষ্ট দেখিলে তাকে ম্যালেরিয়া বলা যেতে পারে। অনেক সময় দেখা যায় ম্যালেরিয়া জ্বর কোন এক নিরূপিত সময় আসে কিন্তু মাঝে মাঝে আবার ব্যতিক্রম ঘটে তাই এটিকে তিনভাগে ভাগ করা যায়।
- প্রত্যহ একবার জ্বর।
- একদিন অন্তর জ্বর বা পালি জ্বর।
- দুইদিন অন্তর জ্বর বা পালি জ্বর।
- অবিরাম ম্যালেরিয়া জ্বর : এই প্রকারের ম্যালেরিয়া জ্বর সকল সময় থাকে এবং টাইফয়েডের সাথে ভুল হইতে পারে। তবে কখনো কখনো জ্বরের মাত্রা কমে আবার কখনো বৃদ্ধি পায়। কিন্তু Step ladder like হয় না। রোগীর জিহ্বা শুকনা এবং বাদামি রঙের হয়। অনেক সময় রোগীর ডায়রিয়াও দেখা দেয়।
- ক্রোনিক অবস্থা: কিছুদিন জ্বর হয়, আবার কমে যায়। আবার জ্বর হয় এমনিভাবে বার বার জ্বর হলে প্লীহা বাড়ে অনেকদিন পর শক্ত হয় লিভার বাড়ে ও তখন আবার রক্তহীনতা দেখা যায় না।
- ম্যালিগন্যান্ট ম্যালেরিয়া (পার্নিসাস ম্যালেরিয়া): এসব রোগীর জ্বর দ্রুত বৃদ্ধি পায় ১০৪ থেকে ১০৪ ডিগ্রি পর্যন্ত উঠতে পারে। রোগী ভুল বকে এবং অজ্ঞান হয়। অনেক সময় মাথায় অবিরত পানি দিলেও কিছুতেই এই জ্বর নামতে চায় না। রক্ত পরীক্ষা করলে ম্যালেরিয়া জীবাণু পাওয়া যায় সেজন্য সম্ভব হলে রক্ত পরীক্ষা করে রিপোর্ট করিয়া সঙ্গে সঙ্গে (Quinine) কুইনাইন ইনজেকশন দিতে হয়। তবে, অবশ্যেই ডাক্তার এর পরার্মশ গ্রহণ করে ইনজেকশন এবং চিকিৎসা করা উচিত।
সম্পর্কিত আরও পড়ুন: শরীর ফিট রাখার ১০ টি উপায়।
ম্যালেরিয়া রোগের প্রতিকার
- বেশি অসুবিধা হলে বড় বা ঠান্ডা পানি দ্বারা হাত-পা শরীর স্পঞ্জ করে দিতে হবে।
- বেশি জ্বরে মাথায় প্রচুর পানি দিতে হবে।
- ম্যালেরিয়া হলে রক্ত পরীক্ষায় এম্পি টেস্ট পজিটিভ হবে।
- জ্বর বৃদ্ধি পেলে বমি হইতে পারে বলিয়া জ্বরে প্রথম অবস্থায় গরম পানি ও তাহার সাথে লেবুর রস খাইতে দেওয়া যায়।
- জ্বর চলে গেলে সাগু, বার্লি খাইতে দেওয়া যায়। তবে চিকিৎসার পর জ্বর বন্ধ হলে সাগু, সাগুভাত, ছোট মাছের ঝোল ও পরিশেষে ভাত দেওয়া যায়।
- স্যাঁত-সেঁতে জায়গায় থাকা উচিত নয়।
আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url