বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম, সুবিধা, ও মার্চেন্ট লিমিট

বর্তমান সময়ে বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম এবং মার্চেন্ট একাউন্ট ব্যবহার  অনেক সহজ । যা কেউ চাইলেই মার্চেন্ট একাউন্ট এর নিয়ম জেনে একটি একাউন্ট তৈরী করতে পারে নিমিষেই। বর্তমান সময়ে মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস (MFS) অন্যতম একটি সুবিধাজনক মাধ্যম হয়ে উঠেছে আমাদের এ দেশে। এর মধ্যে বিকাশ অন্যতম জনপ্রিয় সেবা। বিকাশ শুধুমাত্র ব্যক্তিগত লেনদেনের জন্য নয়, বর্তমানে বিকাশ ব্যবসায়িক লেনদেনেও লোকাল ভোক্তার পূর্ব পর্যায়ের ব্যবসায়ীদের একটি ভালো সুযোগ নিয়ে এসেছে, যা হল বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট নামে পরিচিত। বিকাশ এর মার্চেন্ট যা বিকাশের লোকাল পর্যায়ে ভোক্তাদের সেবা প্রদান করে থেকে এবং এর মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করে থাকে।

বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম

বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খোলার মাধ্যমে এই ব্যবসায়ীরা সহজে তাদের লেনদেন পরিচালনা এবং বিকাশ গ্রাহকদের থেকে টাকা গ্রহণ, ও টাকা পাঠানোর মাধ্যমে বিকাশ ভোক্তাদের তাঁদের নিকটস্থ এলাকায় এই সেবা টি প্রদান করে। এবং এই কাজটি যারা করে থাকেন তাঁদেরকে বিকাশের মার্চেন্ট বলা হয়ে থাকে। তাই আজকের ব্লগে আমরা ধাপে ধাপে আলোচনা করব কীভাবে বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খোলা যায় এবং কীভাবে বিকাশের মার্চেন্ট একাউন্ট খুলে অর্থ উপার্জন করা যায়।

বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খোলার সুবিধা:

বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট ব্যবসায়ীদের জন্য রয়েছে অনেক সুবিধা। এখানে কিছু প্রধান সুবিধা বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট ব্যবসায়ীদের জন্য উল্লেখ করা হলো:

ডিজিটাল পেমেন্ট গ্রহণ: আপনার গ্রাহকরা সহজে মোবাইলের মাধ্যমে পেমেন্ট করতে পারবেন। 

লেনদেনের ট্র্যাকিং: বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্টের মাধ্যমে আপনি আপনার সকল ধরণের লেনদেনের রেকর্ড রাখতে পারবেন।

লেনদেন গ্রহণ : যেকোনো সময় এবং যেকোনো জায়গা থেকে বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট এর মাধ্যমে পেমেন্ট গ্রহণ করতে পারবেন।

ব্যাংক ট্রান্সফার : বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট থেকে আপনি সরাসরি যেকোনো ব্যাংক একাউন্টে খুব সহজে টাকা ট্রান্সফার করতে পারবেন।

আরো পড়ুন: বিকাশ গ্রাহক একাউন্ট খোলার নিয়ম : এখন সহজ ২ টি পদ্ধতিতে।

QR কোড সুবিধা: আপনার বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট এর QR কোড তৈরি করে বিকাশ গ্রাহকদের থেকে দ্রুত টাকা গ্রহণ করতে পারবেন। এক্ষেত্রে নাম্বার ভুল হওয়ার কোনো চান্স নেই। 

বিল ও ইনভয়েস: বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্টের মাধ্যমে যে কোনো ধরণের বিল ও ইনভয়েস তৈরি করতে পারবেন খুব সহজে।

বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খোলার জন্য প্রয়োজনী ডকুমেন্ট :

একটি বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খোলার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট এবং তথ্য প্রয়োজন। নিচে গুরুত্বপূর্ণ সব ডকুমেন্ট ও তথ্যের তালিকা দেওয়া হলো:

জাতীয় পরিচয়পত্র (NID): যে ব্যক্তি এই ব্যবসার মালিক তার বৈধ জাতীয় পরিচয়পত্র থাকতে হবে।

ব্যবসায়িক লাইসেন্স: যে ব্যক্তি এই ব্যবসার মালিক তার বৈধ লাইসেন্স বা ট্রেড লাইসেন্স জমা দিতে হবে। ব্যাংক একাউন্ট নম্বর: আপনার এই ব্যবসার নামে একটি ব্যাংক একাউন্ট থাকতে হবে, যেখানে বিকাশ পেমেন্ট ট্রান্সফার হবে। মোবাইল নম্বর: বিকাশ একাউন্টের জন্য একটি মোবাইল নম্বর লাগবে, যা আপনার মার্চেন্ট একাউন্টে সংযুক্ত করা হবে। ব্যবসার ঠিকানা: আপনার ব্যবসার স্থানের সঠিক ঠিকানা প্রদান করতে হবে।

বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম

এখন ধাপে ধাপে আলোচনা করা যাক কীভাবে আপনি বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খুলতে পারেন। পুরো প্রক্রিয়াটি বেশ সহজ এবং দ্রুত। পুরো প্রক্রিয়টি ভালো করে পড়ুন:

পদ্ধতি ১: অনলাইনে বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খোলা

১. প্রথমে বিকাশ ওয়েবসাইটে যান: প্রথমে, আপনার কম্পিউটার বা মোবাইল থেকে বিকাশের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট (https://www.bkash.com) এ যান এবং "Merchant" অপশনে ক্লিক করুন। ২. রেজিস্ট্রেশন ফর্ম পূরণ করুন: ওয়েবসাইটে গেলে, একটি রেজিস্ট্রেশন ফর্ম দেখতে পাবেন। সেখানে আপনার ব্যবসার নাম, মালিকের নাম, ব্যবসার ঠিকানা, মোবাইল নম্বর, ব্যাংক একাউন্ট তথ্য, এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় পূরণ করুন। ৩. ডকুমেন্ট আপলোড করুন: আপনার ট্রেড লাইসেন্স, জাতীয় পরিচয়পত্র (NID), এবং ব্যাংক একাউন্ট ডকুমেন্ট স্ক্যান করে আপলোড করুন। ৪. আবেদন জমা দিন: ফর্ম এবং ডকুমেন্ট আপলোড করার পর, আপনার আবেদনটি বিকাশ কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিন। তারা আপনার তথ্য যাচাই করবে এবং কয়েকদিনের মধ্যে আপনার একাউন্টটি অ্যাপ্রুভ হবে।

আরো পড়ুন: বিকাশ কাস্টমার কেয়ার কোথায় কোথায় আছে জেনে নিন। ৫. নোটিফিকেশন পান: একবার আপনার আবেদন অনুমোদিত হলে, বিকাশ থেকে একটি নোটিফিকেশন বা মেসেজ পাবেন। এরপর আপনি বিকাশ মার্চেন্ট সেবা ব্যবহার করতে পারবেন।

পদ্ধতি ২: বিকাশ এজেন্টের মাধ্যমে একাউন্ট খোলা

আপনি চাইলে বিকাশের অনুমোদিত এজেন্টের কাছ থেকেও মার্চেন্ট একাউন্ট খুলতে পারেন। এর জন্য নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন: ১. নিকটস্থ বিকাশ এজেন্ট খুঁজুন: আপনার নিকটস্থ বিকাশ এজেন্ট বা বিকাশ এজেন্ট আর কাছে যান। ২. ডকুমেন্ট জমা দিন: এজেন্টকে আপনার ব্যবসার প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট (NID, ট্রেড লাইসেন্স, ব্যাংক একাউন্ট নম্বর)সহ প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট গুলো এজেন্ট এর নিকট জমা দিন। ৩. ফর্ম পূরণ করুন: বিকাশের এজেন্ট আপনাকে একটি ফর্ম পূরণ করতে বলবে, যেখানে আপনার ব্যবসার সব তথ্য থাকবে। ৪. আবেদন জমা দিন: ফর্ম পূরণের পর এজেন্ট আপনার বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট এর আবেদন জমা দেবে। কিছুদিনের মধ্যে বিকাশ থেকে আপনার একাউন্ট অনুমোদনের মেসেজ আসবে।

বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খোলার পর করণীয়:

বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খোলার পর কিছু বিষয় আপনার মাথায় রাখতে হবে যাতে আপনার ব্যবসায়িক লেনদেন সঠিকভাবে এবং সঠিক নিয়মে হয়। QR কোড তৈরি করুন: প্রথমেই আপনার বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্টের জন্য একটি বিকাশ QR কোড তৈরি করুন এবং তা আপনার দোকানে সামনে প্রিন্ট করে দিয়ে রাখুন। বিকাশ পিন নম্বর সেট করুন: বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট ব্যবহারের জন্য একটি অতি গোপনীয় পিন নম্বর সেট করুন। বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট লেনদেনের সীমা সম্পর্কে জানুন: বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্টের দৈনিক এবং মাসিক লেনদেনের সীমা সম্পর্কে জানুন, যাতে আপনার ব্যবসার জন্য কতটুকু লেনদেন আপনি করতে পারেন দৈনিক এবং মাসিক। গ্রাহকদের থেকে পেমেন্ট নিন: আপনি সহজে গ্রাহকদের থেকে পেমেন্ট গ্রহণ করতে গুগল প্লেস্টোর থেকে বিকাশ মার্চেন্ট অ্যাপ টি ডাউনলোড করে লেনদেন করুন যা আপনার এবং আপনার বিকাশ গ্রাহকদের জন্য লেনদেন আরো সহজ করে তুলে। ব্যাংক ট্রান্সফার: বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট এর একটি অন্যতম সুবিধা হলো বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট থেকে আপনার ব্যবসার ব্যাংক একাউন্টে সহজেই টাকা ট্রান্সফার করতে পারবেন।

বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট ব্যবহারের টিপস:

বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট ব্যবহার করার সময় কিছু বিষয় খেয়াল রাখা উচিত। যেমন:
সন্দেহজনক কার্যকলাপ রিপোর্ট : কখনো বিকাশ গ্রাহকদের থেকে কোনো সন্দেহজনক লেনদেন বা প্রতারণার শিকার হন, সাথে সাথে বিকাশ কাস্টমার কেয়ার (16247) এ যোগাযোগ করুন। ব্যাকআপ যোগাযোগের মাধ্যম : আপনার একাউন্টের নিরাপত্তা বৃদ্ধির জন্য একটি অন্য একটি মোবাইল নম্বর বা ইমেইল বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট এর সাথে সংযোগ দিয়ে রাখুন।

আরো পড়ুন: নগদ একাউন্ট দেখার নিয়ম - ২০২৪। নিরাপত্তা বা পাসওয়ার্ড : আপনার পিন নম্বর এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিরাপদে রাখতে এই পিন নম্বর এবং আপনার একাউন্ট এর গুরুত্বপূর্ণ তথ্য কখনই শেয়ার করবেন না। উপসংহার:

বিকাশ মার্চেন্ট একাউন্ট খোলার মাধ্যমে আপনার ব্যবসায় আরো মুনাফা করতে আরো সহজ হয়। বর্তমানে ডিজিটাল পেমেন্ট আদান-প্রদান এর মাধ্যমে ক্যাশলেস লেনদেন বাড়ানোর পাশাপাশি বিকাশের মাধ্যমে আপনার ব্যাবসায় কে উন্নতি এবং অধিক মুনাফা তৈরি করতে সাহায্য করে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url
https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEiRsv7n3slK-wJ6kBKngfhLNOPtVsNrO-2Z5gEgbPTGq6I_SJeP-7kpgTgWJz8VzcmRCDLjH9sPZXEj5aVCXm59B5tMjsSaknCTzxO5k9WV5peiAATvHQcW5d7I5Ts7CafA6FpzeT1ncH7cbz_iSAq3jLhnHuDaKmUhATV3lUqN4fKe9IXYk3pzWfZMHNo/s320/NATURAL-Health-Supplement.jpg