রোজার ফজিলত সম্পর্কে ১০ টি গুরুত্বপূর্ণ হাদিস
রোজা ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এটি শুধু ধর্মীয় কর্তব্য নয়, বরং এটি আমাদের জীবনের একটি পরিপূর্ণ পদ্ধতি। রোজা রাখার মাধ্যমে আমরা শারীরিক, মানসিক এবং আধ্যাত্মিকভাবে উন্নতি লাভ করে থাকি। রমজান মাসে রোজা রাখা ফরজ, তবে এর বাইরেও নফল রোজা রাখার প্রচুর ফজিলত রয়েছে। এই ব্লগ পোস্টে আমরা রোজার ফজিলত সম্পর্কে ১০টি হাদিস ও তার অর্থ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
রোজার ফজিলত সম্পর্কে হাদিস
হাদিস নং ১
হাদিস: হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, "যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে এবং সওয়াবের আশায় রমজান মাসে রোজা রাখে, তার পূর্বের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।" (বুখারি ও মুসলিম)
অর্থ: এই হাদিসে বলা হয়েছে যে, যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে এবং সওয়াবের আশায় রমজান মাসে রোজা রাখে, তার পূর্বের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। এটি রোজার একটি বড় ফজিলত।
হাদিস নং ২
হাদিস: হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, "রোজা ঢালস্বরূপ। তাই রোজা রাখার দিনে তোমরা অশ্লীল কথা বলবে না এবং হৈচৈ করবে না। যদি কেউ তোমাকে গালি দেয় বা তোমার সাথে ঝগড়া করে, তাহলে তুমি বলবে, আমি রোজাদার।" (বুখারি ও মুসলিম)
অর্থ: এই হাদিসে বলা হয়েছে যে, রোজা ঢালস্বরূপ। এটি আমাদেরকে অশ্লীল কথা ও হৈচৈ থেকে রক্ষা করে। যদি কেউ গালি দেয় বা ঝগড়া করে, তাহলে আমরা বলব, আমি রোজাদার।
হাদিস নং ৩
হাদিস: হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, "আল্লাহ তাআলা বলেছেন, রোজা আমার জন্যই এবং আমি নিজেই এর প্রতিদান দেব। রোজাদার আমার জন্যই তার প্রবৃত্তি ও খাবার-দাবার ত্যাগ করে।" (বুখারি)
অর্থ: এই হাদিসে বলা হয়েছে যে, রোজা আল্লাহর জন্য এবং তিনি নিজেই এর প্রতিদান দেবেন। রোজাদার আল্লাহর জন্য তার প্রবৃত্তি ও খাবার-দাবার ত্যাগ করে।
হাদিস নং ৪
হাদিস: হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, "যে ব্যক্তি রমজান মাসে রোজা রাখে এবং রাত জেগে ইবাদত করে, তার পূর্বের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।" (বুখারি ও মুসলিম)
অর্থ: এই হাদিসে বলা হয়েছে যে, যে ব্যক্তি রমজান মাসে রোজা রাখে এবং রাত জেগে ইবাদত করে, তার পূর্বের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।
হাদিস নং ৫
হাদিস: হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, "রোজাদারের মুখের গন্ধ আল্লাহর নিকট মিস্কের সুগন্ধির চেয়েও প্রিয়।" (বুখারি)
অর্থ: এই হাদিসে বলা হয়েছে যে, রোজাদারের মুখের গন্ধ আল্লাহর নিকট মিস্কের সুগন্ধির চেয়েও প্রিয়।
হাদিস নং ৬
হাদিস: হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, "রোজাদারের জন্য দুটি খুশি: একটি ইফতারের সময়, অন্যটি আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের সময়।" (বুখারি ও মুসলিম)
অর্থ: এই হাদিসে বলা হয়েছে যে, রোজাদারের জন্য দুটি খুশি: একটি ইফতারের সময়, অন্যটি আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের সময়।
হাদিস নং ৭
হাদিস: হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, "রোজা এবং কুরআন বান্দার জন্য শাফায়াত করবে। রোজা বলবে, হে আল্লাহ, আমি তাকে দিনের বেলায় খাবার ও প্রবৃত্তি থেকে বিরত রেখেছি। তাই তার ব্যাপারে আমার শাফায়াত কবুল করুন। কুরআন বলবে, আমি তাকে রাতের বেলায় ঘুম থেকে বিরত রেখেছি। তাই তার ব্যাপারে আমার শাফায়াত কবুল করুন।" (আহমদ)
অর্থ: এই হাদিসে বলা হয়েছে যে, রোজা এবং কুরআন বান্দার জন্য শাফায়াত করবে। রোজা বলবে, হে আল্লাহ, আমি তাকে দিনের বেলায় খাবার ও প্রবৃত্তি থেকে বিরত রেখেছি। তাই তার ব্যাপারে আমার শাফায়াত কবুল করুন। কুরআন বলবে, আমি তাকে রাতের বেলায় ঘুম থেকে বিরত রেখেছি। তাই তার ব্যাপারে আমার শাফায়াত কবুল করুন।
হাদিস নং ৮
হাদিস: হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, "রোজাদারের জন্য জান্নাতে রাইয়ান নামক একটি দরজা রয়েছে, যার মাধ্যমে শুধুমাত্র রোজাদাররা প্রবেশ করবে।" (বুখারি ও মুসলিম)
অর্থ: এই হাদিসে বলা হয়েছে যে, রোজাদারের জন্য জান্নাতে রাইয়ান নামক একটি দরজা রয়েছে, যার মাধ্যমে শুধুমাত্র রোজাদাররা প্রবেশ করবে।
হাদিস নং ৯
হাদিস: হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, "রোজা রাখা এবং কুরআন তিলাওয়াত করা বান্দার জন্য কিয়ামতের দিন শাফায়াত করবে।" (আহমদ)
অর্থ: এই হাদিসে বলা হয়েছে যে, রোজা রাখা এবং কুরআন তিলাওয়াত করা বান্দার জন্য কিয়ামতের দিন শাফায়াত করবে।
হাদিস নং ১০
হাদিস: হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, "রোজাদারের ইফতারের সময় দোয়া কবুল হয়।" (ইবনে মাজাহ)
অর্থ: এই হাদিসে বলা হয়েছে যে, রোজাদারের ইফতারের সময় দোয়া কবুল হয়।
উপসংহার
রোজা রাখা শুধু একটি ধর্মীয় ইবাদতই নয়, এটি আমাদের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। রোজা রাখার মাধ্যমে আমরা শারীরিক, মানসিক এবং আধ্যাত্মিকভাবে উপকৃত হই। এটি আমাদের আত্মনিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং আল্লাহর নিকট আমাদেরকে আরও কাছে নিয়ে যায়। তাই আমাদের উচিত রোজা রাখার সময় সঠিক নিয়ত করা এবং এর মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা।
আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url