আয়াতুল কুরসি বাংলা Ayatul Kursi Bangla উচ্চারণ অর্থসহ
আয়াতুল কুরসি বাংলা উচ্চারণ অর্থসহ- Ayatul Kursi Bangla
আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লাহু আল্ হাইয়্যুল কাইয়্যূম; লা তা'খুজুহু ছিনাতুউঁ ওয়া লা নাউম; লাহু মা ফিছ ছামাওয়াতি ওয়ামা ফিল আরদ্ব; মান জান্নাযী ইয়াশফাউ ইন্দাহু ইল্লা বিইজনিহ; ইয়া'লামু মা বাইনা আইদীহিম ওয়ামা খালফাহুম; ওয়ালা ইউহীতুনা বিশাইইম মিন ইলমিহী ইল্লা বিমাশাআ; ওয়াসিয়া কুরছিয়্যুহুছ ছামাওয়াতি ওয়াল আরদ্বা, ওয়ালা ইয়াউদুহু হিফজুহুমা; ওয়া হুয়াল আলিয়্যুল আজীম।
অর্থ: সেই আল্লাহ্ তাআলা ব্যতীত কোন উপাস্য নাই-যিনি চির জীবন্ত ও সদা বিরাজমান; তন্দ্রা এবং নিদ্রা তাঁহাকে স্পর্শ করিতে পারে না; নভোমন্ডলে যাহা কিছু আছে এবং ভূমন্ডলে যাহা কিছু আছে সব তাঁহারই; এমন কে আছে যে তাঁহার অনুমতি ব্যতীত তাঁহার নিকট সুপারিশ করিতে পারে? তাহাদের পশ্চাতে যাহা কিছু রহিয়াছে এবং তাহাদের সম্মুখে যাহা কিছু রহিয়াছে তিনি তাহা পরিজ্ঞাত আছেন; তিনি যাহা ইচ্ছা করেন, তাহা ব্যতীত তাঁহার অনন্ত জ্ঞানের কোন বিষয়ই কেহ ধারণা করিতে সক্ষম নহে; তাঁহার আসন ও সাম্রাজ্য নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল পরিব্যাপ্ত হইয়া রহিয়াছে এবং এতদুভয়ের সংরক্ষণে তাঁহাকে বিব্রতবোধ করিতে হয় না। আর তিনি সমুন্নত ও মহীয়ান।
আরো পড়ুন: ফরজ গোসলের নিয়ম ও সঠিক নির্দেশনা।
আয়াতুল কুরসিতে আল্লাহ্ পাকের দশটি বিশেষ গুণের কথা বিধৃত রহিয়াছে। যথা:
১. ‘আল্লাহ ব্যতীত কোনই উপাস্য নাই' এই বাক্যের দ্বারা তাঁহার একত্ব ও অদ্বিতীয়ত্ব ঘোষণা করা হইয়াছে এবং যাবতীয় জীব ও জড়-পূজা, পৌত্তলিকতা ও অংশীবাদিতার মূলোচ্ছেদ করা হইয়াছে।
২. 'যিনি চির জীবন্ত ও সদা বিরাজমান' বাক্য দ্বারা আল্লাহ্ অচেতন ও অন্ধ শক্তি বলিয়া যাহারা ধারণা পোষণ করে, তাহাদের ভ্রান্ত ধারণা খণ্ডন করা হইয়াছে।
৩. তন্দ্রা এবং নিদ্রা তাঁহাকে স্পর্শ করিতে পারে না' বাক্য দ্বারা প্রমাণ করা হইয়াছে যে, আল্লাহ্ পাক সৃষ্ট জীবের গুণ ও স্বভাবধর্ম এবং দোষ-দুর্বলতা করা হইয়াছে যে, নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলের অধিপতি একমাত্র তিনিই।
৪. 'নভোমণ্ডলে ও ভূমণ্ডলে যাহা কিছু আছে সব তাঁহারই' বাক্য দ্বারা ঘোষণা হইতে মুক্ত, পবিত্র।
৫. তাঁহার অনুমতি ব্যতীত কেহই তাঁহার নিকট অপরের জন্য সুপারিশ করিতে পারিবে না'।
আরো পড়ুন: জুমার দিনের বিশেষ আমল ও ফজিলত।
৬. বাক্য দ্বারা ঘোষণা করা হইয়াছে যে, আল্লাহ পাক ভূত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ দ্রষ্টা। তাঁহার অগোচরে কিছুই সংঘটিত হয় না।
৭. 'তাঁহার ইচ্ছা ব্যতীত তাঁহার অনন্ত জ্ঞানের কোন বিষয়ই কেহ ধারণা করিতে পারে না' বাক্য দ্বারা ঘোষণা করা হইয়াছে যে, মানুষের জ্ঞান অতি অকিঞ্চিৎকর ও সীমাবদ্ধ।
৮. 'তাঁহার আসন ও সাম্রাজ্য নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডল পরিব্যাপ্ত হইয়া রহিয়াছে' বাক্য দ্বারা প্রমাণিত হইয়াছে যে, জীব ও জড় জগতের মধ্যে তাঁহার জ্ঞান-গরীমা, প্রতিপত্তি ও সাম্রাজ্য পরিবেষ্টন করিয়া রহিয়াছে। অতএব তাঁহার শক্তি ও শাসন অতিক্রম করিবার ক্ষমতা ও অধিকার কাহারও নাই।
৯. ‘এতদুভয়ের সংরক্ষণে তাঁহাকে বিব্রতবোধ করিতে হয় না' বাক্য দ্বারা ঘোষণা করা হইয়াছে যে, এই মহাবিশ্বের জীব ও জগতের সংরক্ষণ ও প্রতিপালন তাহার অনন্ত শক্তি ও অসীম মহিমার বলে অত্যন্ত সহজ। এইজন্য তিনি কখনও বিব্রত বোধ করেন না।
১০. ‘আর তিনি সমুন্নত ও মহীয়ান' বাক্য দ্বারা ঘোষণা করা হইয়াছে যে, অনন্ত ঐশী শক্তির অধিকারী কেবলমাত্র তিনিই। তাঁহার মত গৌরব ও সম্মান অন্য কাহারও নাই।
এইজন্য কোন বুযর্গ ব্যক্তি আয়াতুল কুরসিকে ‘দশ রত্নের সমাহার' রূপে আখ্যায়িত করিয়াছেন এবং ইহাকে দশ দিক, দশ লতিফা, হস্তপদের দশ আঙ্গুল ইত্যাদি হেফাজতের শ্রেষ্ঠতম আয়াত বলিয়া বর্ণনা করিয়াছেন।
হযরত উবাই ইবনে কা'ব হইতে বর্ণিত আছে যে, আয়াতুল কুরসির একটি জিহ্বা ও দুইটি মুখ রহিয়াছে। ইহা ফেরেশতার আকারে আল্লাহ্ পাকের মর্যাদাশীল আরশের ছাদে বসিয়া আল্লাহ্ পাকের পবিত্রতা ও গুণাবলী বর্ণনা করিতেছে।
আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url