একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস কবে স্বীকৃতি পায়: আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি আদায়ের জন্য প্রথম কাজ শুরু করেন কানাডা প্রবাসী দুই জন বাংলাদেশি। তারা সেখানে 'মাদার ল্যাঙ্গুয়েজ অফ দ্য ওয়ার্ল্ড' নামে একটি সংস্থা গড়ে তুলেন। এরা হচ্ছেন রফিকুল ইসলাম ও আবদুল ছালাম। ১৯৯৮ সালের ৯ জানুয়ারি তারা একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণার জন্য জাতিসংঘের সাথে যোগাযোগ করার ফলেই আমাদের মাতৃভাষা দিবস আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মর্যাদা লাভ করেছে। জাতিসংঘ মহাসচিব এর পরামর্শ অনুযায়ী তারা ২৭ টি দেশের প্রতিনিধিদের সাথে আলোচনা করেন। পরে রফিক, সালাম, বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা সচিব জনাব কাজী রকিব উদ্দিন এর সাথে যোগাযোগ করেন। তিনি তাদের জানার সরকারিভাবে যা করণীয় তা করবেন।
ইউনেস্কো কর্তৃক আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস কবে স্বীকৃতি পায় ?
প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বিষয়টি শিক্ষাসচিব শিক্ষামন্ত্রীকে জানান শিক্ষামন্ত্রী এ.এইচ.কে সাদেক তখন তা প্রধানমন্ত্রীর গোচরে আনেন। সব শুনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অত্যন্ত খুশি হন। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে সরকারিভাবে যা কিছু করা প্রয়োজন যা করতে হবে তার জন্য শিক্ষামন্ত্রীকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন। অবশেষে ইউনেস্কোর সাথে যাবতীয় আলোচনা করেন ইউনুস্কো ১৯৯৯ সালের ১৭ ই নভেম্বর বাংলা ভাষাকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে স্বীকৃতি পায়।
বাংলা ভাষার আন্তর্জাতিক মর্যাদা লাভ: বাংলা ভাষা আজ নিজস্ব গৌরবে দীপ্তিমান। এ জাতির আত্মদান আজ বিফল হয়নি। জাতিসংঘের অঙ্গ সংস্থা ইউনেস্কো কর্তৃক ১৯৯৯ সালে বাংলাকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার মর্যাদার স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়। সমগ্র বিশ্বব্যাপী আজ বাঙালি জাতির আত্মত্যাগের কথা বিদিত হয়েছে। বাঙালিরাও নিজেদের অহংকার জাতি বলে পরিচয় দিতে পারছে। এমনকি আফ্রিকান দেশ সিয়েরালিওন তাদের দেশে বাংলা ভাষাকে দ্বিতীয় ভাষার মর্যাদা দান করেছে।
একুশে ফেব্রুয়ারির দিন সকালে মেডিকেল কলেজের প্রধান ফটক থেকে ছাত্র আবার মিছিল করার উদ্যোগ নেয়। তখন তিন জন তিন জন করে ছাত্র মিছিল বের করে কিন্তু তারপরও পুলিশের মিছিলের ওপর টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করে। ফলে ঢাকা মেডিকেল কলেজের হোস্টেলের সামনে এসে আশ্রয় নেয়। কিন্তু সেখানেও পুলিশ টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে এবং ছাত্রদের উপর লাঠিচার্জ করে। এর প্রতিবাদে ছাত্রদলের সদস্য আব্দুল জব্বার এবং রফিকউদ্দিন আহমদ নিহত হন। ১৭ জন আহত হন যাদেরকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাদের মধ্যে আবুল বরকত রাত ৮ টার সময় শহীদ হন। এরপর ছাত্রছাত্রীদের ওপর অতর্কিত ভাবে গুলি চালানো হয় যাতে এক ভয়ানক পরিস্থিতির জন্ম হয়।
১৯৫২ সালের ভাষা শহীদ : ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারিতেই যে শুধুমাত্র সকল শহীদ মৃত্যুবরণ করে তা নয়। ২২ শে ফেব্রুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন আবার আহতদের মধ্যে অনেকেই এই ঘটনার কিছুদিন পর মৃত্যুবরণ করেন। তিনি মৃত্যুবরণ করেন ভাষা শহীদদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন আবদুল জব্বার, রফিক উদ্দিন আহমেদ, আব্দুস সালাম এবং আরো অনেকে তাদের মধ্যে প্রথম ভাষা শহীদ রফিক উদ্দিন আহমেদ।
উপসংহার: ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি সমগ্র বাঙালি জাতিযে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল তার পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। আর এ জাতি মায়ের ভাষাকে কুলুসিত হতে দেয়নি যার ফলে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস স্বীকৃতি পায় এই বাঙ্গালীরা। জীবন দিয়ে ভাষার সম্মান অক্ষুন্ন রেখেছে। আর তাই আজ আমরা বাংলা ভাষায় স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারি। বাংলাদেশ আজ আমাদের মাতৃভূমি এবং আমরা বাঙালি জাতি হিসেবে বিশ্বের সর্বোত্তম পরিচয় দিতে পারি। সবকিছু সম্ভব হয়েছে ভাষা শহীদের আত্মত্যাগের ফলে।কারণ ভাষার জন্য লড়াই করে তারা বাঙালি জাতিকে তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করেছে।
আরো পড়ুন: ১৯৭০ সালের নিবার্চন ও নির্বাচনের গুরুত্ব সম্পর্কে জানুন।
আমাদের কথা , ১৫৫২ সালে বাংলা ভাষাকে উর্দু ভাষা করার জন্য পশ্চিম পাকিস্তান এই পূর্ব পাকিস্তানের উপর চাপ প্রয়োগ করে। বাংলার দামাল ছেলেরা প্রাণের ভাষা মায়ের ভাষাকে টিকেয়ে রাখার জন্য এক একে পুলিশের অতর্কিত গুলিতে শহীদ হন। এই বাংলার ছেলেরা যা এই আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস কবে স্বীকৃতি পায় পোস্টে আপনাদের জন্য উপস্থাপন করা হয়েছে।
আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url