বৃক্ষরোপনের প্রয়োজনীয়তা জানিয়ে বন্ধুর নিকট পত্র

বৃক্ষ শুধু অক্সিজেন সরবরাহ নয়। প্রতিটি ক্ষেত্রেই বৃক্ষ আমাদের বেছে থাকার অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাই , বৃক্ষরোপনের প্রয়োজনীয়তা জানিয়ে বন্ধুর নিকট একখানা পত্র কিভাবে লিখবেন তা নিচে দেখুন :

নিচে ২ টি গুরুত্বপূর্ণ বৃক্ষরোপনের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কিত পত্র উপস্থাপন করা হল:

বৃক্ষরোপনের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কিত পত্র

১. বৃক্ষরোপনের প্রয়োজনীয়তা জানিয়ে বন্ধুর নিকট পত্র

প্রিয় জাহিদ হাসান,

আমার শুভেচ্ছা জানিস। আজ অনেকদিন হলো তোর কোনো খোঁজ-খবর নেই। তুই তো আবার পুস্তকের কীট হিসেবে বেশ নাম কিনেছিস। কিন্তু ভালো ছাত্র যারা, তাদেরকে পড়াশোনার বাহিরে ও অনেক কিছু ভাবতে হয়,করতে হয়। আমাদের পরিবেশ যে এখন হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে তো কি তার কোনো খবর রাখিস? খবর কি ছাই আমি রাখতাম আগে! এই তো গত পরশু আমাদের স্কুলে ' বৃক্ষরোপনের প্রয়োজনীয়তা' ওপর একটি সেমিনার ছিল। 

উক্ত সেমিনারে বক্তা হিসেবে প্রস্তুতি নিতে গিয়ে বৃক্ষরোপণের গুরুত্ব সম্পর্কে পুরোপুরি জানতে পেলাম। বিষয়টি ঠিক এমন গভীরভাবে কোনদিন ভেবে দেখিনি। পরিবেশ রক্ষার জন্য একটা দেশের মূল ভূখণ্ডের ৫০ থেকে ৬০ ভাগ বনাঞ্চল থাকা বাঞ্ছনীয়। কিন্তু আশ্চর্য হলেও একথা সত্য যে আমাদের দেশে বনাঞ্চলের পরিমাণ মূল ভূখণ্ডের মাত্র ১৭ ভাগ টিকে আছে। কিন্তু তথাপি ও বৃক্ষ নিধন যজ্ঞ চলছেই।  দ্রুত শহরায়ন, শিল্পায়ন, কাগজ ও ম্যাচ শিল্পের কাঁচামাল, আসবাবপত্র তৈরি, জ্বালানি সরবরাহ ইত্যাদি নানা অজুহাতে মানুষ বৃক্ষ নিধন করে চলছে। এতে পরিবেশের ভারসাম্য বিনষ্ট হচ্ছে। 

সেদিন খবরের কাগজের এক জরিপের রিপোর্টে দেখলাম জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে কেবল ঢাকা শহরে প্রতিদিন সাত টন সীসা ছড়াচ্ছে। কার্বন ডাই অক্সাইড, কার্বন মনোক্সাইড এসব ভয়ঙ্কর ক্ষতিকর গ্যাস এর সাহায্যে প্রতিনিয়ত যেভাবে বায়ুমণ্ডল দূষিত হচ্ছে সে দূষণ প্রতিরোধ কল্পে আমাদেরকে দ্রুত নতুন নতুন বৃক্ষ রোপণের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।  কারণ বৃক্ষই পারে আমাদেরকে দূষণমুক্ত পরিবেশ উপহার দিতে। বৃক্ষ আমাদের জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় অক্সিজেন সরবরাহ করে থাকে।

বর্তমান বিশ্বের বায়ুমন্ডলে গ্রিন হাউজ প্রতিক্রিয়া বেশকিছু ছিদ্র দেখা গেছে। এর ফলে জীবজগৎ বিরাট হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে। এসব সিদ্রপথে সূর্য তার অতি বেগুনি রশ্মি বায়ুমন্ডলের প্রতিনিয়ত ছড়িয়ে দিচ্ছে।  ছিদ্র মেরামত না করতে পারলে জীবজগতের জন্য সাংঘাতিক ক্ষতি। এ ছিদ্র মেরামতের জন্য প্রয়োজন পরিমিত বনাঞ্চল তৈরি ও সংরক্ষণ। কারণবৃক্ষ  ক্ষতিকর গ্যাস গুলোকে প্রতিনিয়ত শোষণ করে থাকে। না দিনে বৃক্ষসম্পদ ধ্বংসের প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হয়ে আমরা পরিবেশের ক্ষতি করছি দ্রুত, দ্রুত বৃক্ষরোপন শুরু করে সে ক্ষতি আমাদের পুষিয়ে নিতে হবে। ঘরের আনাচে-কানাচে পতিত জমিতে রাস্তার দু'পাশে বৃক্ষরোপণ করে গড়ে ভরে তুলতে হবে। মনে রাখতে হবে বৃক্ষ বাঁচলে আমরা বাঁচব। বৃক্ষ আমাদের বন্ধু আদিম সহচর। 

আজ আর নয়। তোদের বাড়ির সবার জন্য শ্রেণি মত সালাম ও শুভেচ্ছা রইলো। তোর চিঠি পেলে আবার লিখব।

ইতি, তোরই প্রিয় শুভ ।

                                                                                    ডাকটিকিট

প্রেরক                                                               

নাম : মোঃ নাহিদ হাসান শুভ 

ঠিকানা:  মোহাম্মদপুর, ঢাকা 1215

প্রাপক

নাম : মোহাম্মদ জাহিদ হাসান 

ঠিকানা: উত্তর বাড্ডা, ঢাকা ১২১৪

২. বৃক্ষরোপনের প্রয়োজনীয়তা জানিয়ে বন্ধুর নিকট পত্র

মোঃ আমির হামজা,

আমার শুভেচ্ছা নাও প্রিয় বন্ধু। বহু দিন হলো গেলো তোমার জন্য লিখি না। তোমার কোনো খোঁজ-খবর পাচ্ছি না অনেকদিন। আজকে তোমাকে নিয়ে লিখতে বসেছি খুব ভালোলাগছে। জানো, আমাদের স্কুল/কলেজগত কালকে একটা 'বৃক্ষরোপনের প্রয়োজনীয়তা' সম্পর্কিত একটা বৃক্ষরোপন সেমিনার হয়েছে। আজ তাই ভাবলাম তোমাকে 'বৃক্ষরোপনের প্রয়োজনীয়তা' জানিয়ে সম্পর্কে একটা পত্র লিখবো। 

তুমি কি জানো, আমরা প্রত্যেক মানুষ জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত মানুষ বৃক্ষের ওপর নির্ভরশীল। আমাদের বেঁচে থাকার জন্য বৃক্ষের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। বৃক্ষ আবহাওয়ার ভারসাম্য রক্ষা করে, পরিবেশকে দূষণমুক্ত করে আমাদের বাসের উপযোগী করে তোলে। বৃক্ষ আমাদের খাদ্যের যোগান দেয়, জ্বালানি সরবরাহ করে। আমাদের জীবনরক্ষাকারী অক্সিজেন বৃক্ষ থেকে পাওয়া যায়। জমির ওপর গড়ে তোলে বৃক্ষ থেকে আমরা আমাদের প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র ও শিল্পের কাঁচামাল পাই। বৃক্ষ  খরা, বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস ইত্যাদি থেকে আমাদের রক্ষা করে কিন্তু আমরা প্রতিনিয়ত বৃক্ষ কেটে ফেলছি এতে দেশের বিভিন্ন এলাকা হয়ে পড়েছে রুক্ষ ও মরুময়। এতে পরিবেশের ভারসাম্য হচ্ছে বিকৃত বৃক্ষের প্রয়োজনীয়তার কথা চিন্তা করে আমাদের সেমিনারটি গঠন করা হয়েছিল আর এর মাধ্যমে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে বৃক্ষরোপণের গুরুত্ব সম্পর্কে ধারণা দিতে জনগণকে উৎসর্গ করে তুলতে আমাদের শিক্ষক-শিক্ষিকাগণ উৎসাহিত করে। 

আজ আর লিখবো না। তোমাদের বাড়ির সবাইকে আমার পক্ষ থেকে সালাম ও শুভেচ্ছা জানিও। তোমার চিঠির অপেক্ষায়।

ইতি, তোরই প্রিয় নুরুল হাসান।

                                                                               ডাকটিকিট

প্রেরক                                                               

নাম : নুরুল হাসান

ঠিকানা:  নিউমার্কেট , ঢাকা-১২০৫

প্রাপক

নাম : মোঃ আমির হামজা

ঠিকানা: তেজগাঁও , ঢাকা-১২১৫ 

আরো পড়ুন: ৫ টি গুরুত্বপূর্ণ আবেদন ও আবেদন পত্র লেখার নিয়ম 

আমাদের কথা, উপরোক্ত পত্রে এই পর্বে আপনি আপনার বন্ধু অথবা নিকট আত্মীয় আপনজনকে বা পরীক্ষায় কিভাবে বৃক্ষরোপনের প্রয়োজনীয়তা জানিয়ে বন্ধুর নিকট পত্র লিখবেন তা ২টি পত্রের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়েছে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url