ব্যষ্টিক অর্থনীতি কাকে বলে ?

ব্যাস্টিক শব্দটির ইংরেজি প্রতিশব্দ হলো 'Micro' Micro শব্দটি এসেছে প্রাচীন গ্রিক শব্দ Micros থেকে শব্দের অর্থ হলো ক্ষুদ্র বা আংশিক। কাজে শব্দগত অর্থের দিক থেকে বলা যায় যে অর্থনীতির যে শাখায় স্বতন্ত্র বা একক বিষয় এবং কার্যাবলী নিয়ে আলোচনা করে তাকে ব্যাষ্টিক অর্থনীতি বলা হয়। নিম্নে কয়েকটি অর্থনীতিবিদ গণের কয়েকটি জনপ্রিয় সংলাপ তুলে ধরা হলো :

ব্যষ্টিক অর্থনীতি কাকে বলে ?

অর্থনীতির যে শাখায় স্বতন্ত্র বা একক বিষয় এবং কার্যাবলী নিয়ে আলোচনা করে তাকে ব্যাষ্টিক অর্থনীতি বলা হয়।

অর্থনীতিবিদ K. E  Boulding  মতে, "ব্যষ্টিক অর্থনীতি এক একটি ফ্রাম, প্রত্যেক পরিবার, প্রত্যেকটি দ্রব্য দাম, মজুরি, আয় প্রত্যেকটি শিল্প এবং প্রত্যেক দ্রব্য সম্পর্কে পৃথকভাবে আলোচনা করে।" 

অধ্যাপক হেন্ডারসন এর ভাষায় "ব্যাস্টিক অর্থনীতি হল ব্যক্তির এবং সুনির্দিষ্ট ব্যক্তিবর্গের অর্থনৈতিক কার্যকলাপের আলোচনা। "

অধ্যাপক মরিচ ডগ এর মতে "অর্থনীতির অণুবীক্ষণিক অবলোকন ও বিশ্লেষণকে ব্যাস্টিক অর্থনীতি বলে। "

উপসংহার : সংক্ষেপে বলা যায় যে, অর্থনীতির যে শাখায় বিভিন্ন ক্ষুদ্র অংশ বা এককের অর্থনৈতিক আচরণ ও কার্যকলাপ পৃথক পৃথকভাবে আলোচনা করা হয় তাকে অর্থনীতি বলা হয়।

আরও পড়ুন: ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান এর গুরুত্ব ও ফলাফল। 

ব্যষ্টিক অর্থনীতির গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা এবং তাৎপর্য ব্যাখ্যা 

ব্যষ্টিক অর্থনীতি কাকে বলে

ভূমিকা : আধুনিক প্রগতিশীল অর্থব্যবস্থায় ব্যষ্টিক অর্থনীতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কল্যাণমূলক অর্থনীতি ও উন্নয়ন অর্থনীতির নীতি প্রণয়নের ক্ষেত্রে ব্যষ্টিক অর্থনীতি অত্যন্ত সহায়ক নিম্নের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করা হলো :

অর্থনৈতিক কার্যক্রম বিশ্লেষণ: ব্যষ্টিক অর্থনীতি ব্যক্তিতন্ত্রবাদী তথা অবাক অর্থনীতির কার্যক্রম সম্পর্কে ধারণা দেয়। কোনো অর্থনৈতিক পরিবেশে কি উৎপাদন করা হবে কিভাবে উৎপাদন করা হবে কার জন্য উৎপাদন করা হবে ইত্যাদি বিষয়ে ব্যষ্টিক অর্থনীতিতে আলোচনা করা হয়। সব বিষয় সম্পর্কে প্রয়োজনীয় সমস্যার সমাধান ব্যষ্টিক অর্থনীতি পাওয়া যায়। 

অর্থনৈতিক নীতি প্রণয়ন: দেশের দাম নীতি সমগ্র অর্থনীতির ওপর প্রভাব বিস্তার করে। সরকার কি ধরনের দাম নীতির প্রণয়ন করলে বাজার ব্যবস্থা সুষ্ঠুভাবে চলতে পারে এ সম্পর্কে ধারণা দেয় ব্যষ্টিক অর্থনীতি।

আরও পড়ুন: বাঙালি সংকর জাতি ব্যাখ্যা কর। 

সম্পদের কাম্য ব্যবহার : কোন একটি দেশের বিদ্যমান সম্পদ সমূহের কাম্য ব্যবহার নিশ্চিত করা যায় সেই সম্পর্কে দিক নির্দেশনা ব্যষ্টিক অর্থনীতিতে পাওয়া যায়।

সম্পদের বন্টন :কোন দেশের প্রাকৃতিক ও মানবিক সম্পদকে কাম্য উৎপাদনের মাধ্যমে কিভাবে ব্যবহার ও বন্টন করা যায় তা ব্যষ্টিক অর্থনীতির আলোচ্য বিষয়। সম্পদের সর্বোচ্চ উৎপাদন এবং ভোক্তার কাম্য উপযোগিতা সৃষ্টির মাধ্যমে সুষম বন্টন নিশ্চিত করে ব্যষ্টিক অর্থনীতি। 

করারোপে : করারোপের মাধ্যমে কর সংগ্রহ, কর বন্টন নীতি, সমাজের কল্যাণ সাধন করা সমাজের করবার নেয় ভিত্তিক কেনা করার দ্বারা বাজার উৎপাদন ভোগের উপর প্রভাব ব্যক্তিগত সামষ্টিক প্রভাব লোকসান ইত্যাদি সমস্যা ও সমাধান নিয়ে ব্যষ্টিক অর্থনীতি কাজ করে। 

সমন্বয় সাধন : উৎপাদনের বিভিন্ন উপাদান এবং বাজারে চাহিদা ও যোগানের মধ্য সমন্বয় সাধন ও ভারসাম প্রতিষ্ঠা করা ব্যষ্টিক অর্থনীতির কাজ। 

আন্তর্জাতিক বাণিজ্য : আন্তর্জাতিক বাণিজ্য লাভ পরিমাপ এবং বাণিজ্য হার নির্ধারণ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাদের বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক উপাদান কাজ করে। লেনদেন ভারসাম্য বৈদেশিক বিনিময় হার নির্ধারণ ইত্যাদি ক্ষেত্রেও ব্যষ্টিক অর্থনৈতিক উপাদান ভূমিকা পালন করে। 

কল্যাণমূলক অর্থনীতি ব্যাখ্যা : ব্যষ্টিক অর্থনীতিতে সামাজিক কল্যাণ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সমাজের কল্যাণ কোন অবস্থায় সর্বাধিক হবে কিভাবে সম্পদের কাম্য ব্যবহার সম্ভব। কিভাবে সমাজের সকল ভোক্তা কাম্যবস্থায় পৌঁছায়। কিভাবে মূল্যবোধের উপর সামাজিক কল্যাণ নির্ভরশীল ইত্যাদি সম্পর্কে ব্যষ্টিক অর্থনীতির ধারণা প্রদান করে। 

উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় যে, যে কোন দেশের অর্থনীতির অবস্থার গভীরতা নিরূপণ এবং তার সাথে বিভিন্ন সমস্যার প্রকৃতি ও এ সমাধান প্রক্রিয়া সম্পর্কে যথাযথ আলোচনা ব্যষ্টিক অর্থনীতিতে করা হয়। অতএব ব্যষ্টিক অর্থনীতির গুরুত্ব অপরিসীম।

আরও পড়ুন: অপারেশন সার্চলাইট কি ?

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url