ভাবসম্প্রসারণ : নানান দেশের নানান ভাষা বিনা স্বদেশী ভাষা মিটে কি আশা
নানান দেশের নানান ভাষা ভাবসম্প্রসারণ
মূলভাব : পৃথিবীর অন্যান্য ভাষা থেকে মাতৃভাষাই সেরা। মাতৃভাষার মাধ্যমে যত সহজে মনোভাব প্রকাশ করা যায় অন্য কোন ভাষার মাধ্যমে তা সম্ভব হয় না। মানুষ ভাষাপ্রীতি মানব হৃদয়ের চিরন্তন বৈশিষ্ট্য। মানুষের কাছে কোন বিদেশি ভাষা মাতৃভাষার মত এত বেশি সমাদ্রিত হতে পারে না। অপর কোন ভাষা মানুষকে এত তৃপ্তিও দিতে পারেনা। স্বদেশের ভাষা মানব-হৃদয়ের সবটুকু স্থান জুড়ে থাকে।
সম্প্রসারিত ভাব : মনের অভিব্যক্তি প্রকাশের উপায় হিসেবে যুগ যুগ ধরে অসংখ্য ভাষার সৃষ্টি হয়েছে। সকল ভাষার চেয়ে সহজ হচ্ছে মাতৃভাষা। মাতৃভাষার মাধ্যমে যেমন সহজ ভাবে মনের কথা প্রকাশ করা সম্ভব হয় অন্য কোন ভাষার মাধ্যমে তা সম্ভব হয় না। মাতৃদুগ্ধ মানব শিশুর বৃদ্ধির জন্য যেমন খুবই উপাদেয় ঠিক তেমনি মাতৃভাষা ও আমাদের মানসিক বৃদ্ধির জন্য একান্ত প্রয়োজনীয়।
মা এবং মাতৃভাষা এ দুটো জিনিসই আমাদের কাছে সমান প্রিয়। কারো বিভিন্ন ভাষায় পাণ্ডিত্য থাকতে পারে, নানা ভাষার মাধ্যমে কেউ বিশ্বের বিপুল জ্ঞান সঞ্চয় করতে পারে। কিন্তু ভাব প্রকাশের মাধ্যম হিসেবে তারা মাতৃভাষার সাহায্য নিয়ে থাকেন। কারণ ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর থেকেই শিশুর পরিচয় ঘটে মাতৃভাষার সাথে। মায়ের সেহ্নঞ্চলের মতোই মাতৃভাষা তার সারা হৃদয় জুড়ে বিরাজ করে। কেবল, দুঃখে-সুখে, আনন্দ-বেদনায় শিশু মাতৃভাষাকেই ব্যবহার করতে শিখেছে। মাতৃভাষাকে কেউ ভোলে না। মাতৃভাষার অবস্থান হৃদয়ের গভীরে। তাই দক্ষ পণ্ডিত ব্যক্তিদেরও মাতৃভাষার মাধ্যমে ভাব প্রকাশ করতে দেখা যায়। এটা তারা হৃদয়ের শান্তি লাভের জন্যই করে থাকেন। অন্য কোন ভাষায় কথা বলে তিনি তৃপ্তি খুঁজে পান না।
অনেক পণ্ডিত ব্যক্তি হয়তো অনেক বিদেশী ভাষা আয়ত্ত করেন। কিন্তু নিজের মাতৃভাষার মাধ্যমে যত সহজে মনোভাব প্রকাশ করা যায়। অপর কোন ভাষায় তা সম্ভব হয় না। আর সেজন্য মাতৃভাষার প্রতি মানুষের ভালোবাসার শেষ থাকে না। এবং সে ভাষার যথার্থ মর্যাদা রাখার জন্য জীবন উৎসর্গ করতে দ্বিধা করে না। প্রসঙ্গত আমরা ১৯৫২ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারির মাতৃভাষা আন্দোলনের কথা স্মরণ করতে পারি। যেখানে মায়ের ভাষার মর্যাদা রক্ষার্থে সালাম, রফিক, বরকত, প্রমুখ শহীদ হয়েছিলেন। মাতৃভাষার উৎকর্ষ সাধনের মাধ্যমে এ আত্মদানের মর্যাদা রক্ষা করতে হবে।
মন্তব্য : মাতৃভাষা সকলের কাছেই প্রিয়। এ ভাষার অবদানের কথা অস্বীকার করার অর্থ হলো নিজের অস্তিত্বকেই অস্বীকার করা যা কোনো জ্ঞানী লোকের কাজ হতে পারে না। আমাদের সবারই উচিত মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষা করা এবং মাতৃভাষাকে সমুন্নত রাখা।
সম্পর্কিত ভাবসম্প্রসারণ: অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে।
আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url