অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে ভাবসম্প্রসারণ

সুপ্রিয় শিক্ষার্থীরা, ভাবসম্প্রসারণ : অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে ভাবসম্প্রসারণ। বিগত দিনের বোর্ড পরীক্ষা থেকে শুরু করে এই ভাবসম্প্রসারণ টি পরীক্ষায় আসছে। এবং সাথে আরও এমন গুরুত্বপূর্ণ ভাবসম্প্রসারণ এখানে ক্লিক করে দেখো এবং পড়ো। নিম্মে ভাবসম্প্রসারণটি রয়েছে :

অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে ভাবসম্প্রসারণ

অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে ভাবসম্প্রসারণ

ভূমিকা : অন্যায় করা আর অন্যায়কারীকে প্রশ্রয় দেওয়ার মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। 

সম্প্রসারিত ভাব : অন্যায়কারী ও অন্যায় সহ্যকারী উভয়ে সমদোষে দোষী বলে উভয় সমান শাস্তি পাবার যোগ্য। পৃথিবীতে ন্যায়-অন্যায়, সত্য-মিথ্যা, ভালো-মন্দ ক্ষমা প্রতিহিংসার সহ-অবস্থান। এখানে ন্যায়-পরায়ন ব্যক্তির পাশাপাশি অন্যায়কারী এবং তার পাশাপাশি আবার অন্যায় সহ্যকারী ব্যক্তির অবস্থান। কিন্তু অন্যায়কারী এবং অন্যায় সহকারী উভয়ের সমান অপরাধী। বিশ্বের যিনি ন্যায়বিচারক তার কাছে উভয়ের কারো ক্ষমা নেই। অন্যায়কারীকে তার প্রাপ্য সাজা প্রদান করতে হবে। অন্যায়কারী ও অন্যায় সহ্যকারীদের সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নিম্নোক্ত চরণ সমূহ এই প্রসঙ্গে স্মরণীয়- 

'নাই সম্মুখের দৃষ্টি, নাই নিবারণ 
পশ্চাত্যের, শুধু নিম্নে ঘোর আকর্ষণ 
নিদারুন নিপাতের। সহসা এদা 
চকিতে চেতনা হবে, বিধাতার গদা
মুহূর্তে পরিবে শিরে'

হযরত আদম (আ) ও হাওয়া (আ) এর  সাথে সাথে আল্লাহ শয়তানকে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। আর এই পৃথিবীতে এক শ্রেণীর লোক আছে, যারা অন্যায় করে, অবিচার করে। হত্যা-রাহাজানি করে তারা সুন্দর পৃথিবীকে অসুন্দর করে এবং সন্ত্রাসের মাধ্যমে সবাইকে সন্ত্রস্ত করে তোলে। তারা মানব সমাজের মহা কলঙ্ক। তাই তারা সমাজের অভিশাপস্বরূপ। শাস্তিকামী সুবেচনাপ্রসূত মানুষ তাদের ধ্বংস কামনা করে। তবে অন্যায় কারীদের এককভাবে দায়ী করা ঠিক হবে না যাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় পেয়ে হত্যা, লুণ্ঠন, রাহাজানি, সন্ত্রাস করে তাদের বিরুদ্ধে যারা প্রতিবাদ না করে বরং মুখ বুজে সহ্য করে তারাও তো তাদের এক প্রকার তৈরি করে। যদি কেউ অন্যায় সহ্য না করে প্রতিবাদ মুখর হত তবে অপকর্মকারী আর অপকর্ম করতে পারত না। কারণ, বিদ্রোহ করলে, বিপ্লব করলে, অবশ্যই অন্যয়কারী আর অন্যায় করতে সাহস পেত না। অন্যায় মুখ বুজে সহ্য করার কারণে যুগ যুগ ধরে অন্যায় হয়ে আসছে সর্বত্রই ঘটনা ঘটছে অহরহ।

তাই বলা যায়, সামর্থ্য থাকুক বা না থাকুক  অন্যায় সহ্য করা যাবে না। শক্তি প্রয়োগ সম্ভব না হলেও অন্তত ঘৃণার মাধ্যমে প্রতিরোধের উদ্যোগ নিতে হবে। তবে একসময় ভীরু, কাপুরুষ, মানুষের জেগে উঠবে রুখে দাঁড়াবে অন্যায়কারীর বিরুদ্ধে। তখন দূর হবে পৃথিবী থেকে অন্যায় অবিচার আর। এভাবে পৃথিবী জঞ্জালমুক্ত হবে। 

মন্তব্য : অন্যায়কারী ও অন্যায়ের প্রশ্রয়দাতা উভয়ই সমান অপরাধী। সুতরাং ন্যায়ের বিবেচনায় উভয়েরী শাস্তি পাওয়া উচিত। তাহলে আর কেউ অন্যায় করতে পারবে না।

সম্পর্কিত ভাবসম্প্রসারণ : শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড। 

অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে ভাবসম্প্রসারণ

ভাবসম্প্রসারণ টির মূল সারাংশ : মূলত এই ভাবসম্প্রসারণ টি মূল সারাংশ হল অন্যায় যেই করেছে এবং এই অন্যায়টি যে দেখেছে এবং যে সহেছে সবাই তারা অপরাধী। আপনার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে অন্যায় যে সহেছে সে  কেন অপরাধী। যে অন্যায় করেছে সে তো অপরাধ করেছে সে তো অবশ্যই অপরাধী কিন্তু যে উক্ত অন্যায় করতে দেখেছে কিন্তু কোনো প্রতিবাদ করেনি এবং এই অন্যায় এর বিরুদ্ধে কথা বলেনি সে ও এক্ষেত্রে অপরাধী। কেননা, সে যদি এই অন্যায় এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াত তাহলে অন্যায় কারীরা পরবর্তীতে অন্যায় করতে সাহস করতো না। পক্ষান্তরে, সমাজে অন্যায় কমে যেত আবিষ্কার হতো নতুন এক পৃথিবীর। এজন্য, অন্যায় যেই করেছে তাকে অবশ্যই অন্যায়ের প্রশয় দেওয়া যাবে না। অন্যায় এর প্রতিবাদ না করতে না পারলে তাকে মন থেকে ঘৃন্না করতে হবে। না হলে অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে আমরাও তাদের সহিলে সমান অপরাধী হিসেবে গণ্য হবো।

সম্পর্কিত ভাবসম্প্রসারণ : স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে রক্ষা করা কঠিন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url