নিম্ন রক্তচাপের লক্ষণ ও নিম্ন রক্তচাপ হলে করণীয়
নিম্ন রক্তচাপ (Low Blood Pressure) সাধারণতঃ একজন সুস্থ লোকের সিস্টোলিক প্রেসার ১০০ হইতে ১৪০ এবং ডায়াস্টোলিক প্রেসার ৬০ থেকে ৯০ এর মধ্যে হতে পারে। অবশ্য বয়সের ওপর ভিত্তি করে এর চাপ কম বেশি হতে পারে। স্বাভাবিক চাপের নীচে রক্তচাপ হলে, এটাকে নিম্ন রক্তচাপ (Low Blood Pressure) বলে । অতি নিম্নচাপের ফলে দেহের সব Artery ও টিস্যুতে রক্ত পৌঁছায় না । তার ফলে ব্রেনে রক্ত পৌঁছায় না। ব্রেনে অক্সিজেন কমের জন্য মাথা ঘোরে, রোগী হঠাৎ অজ্ঞান হয়। প্রয়োজনীয় ভিটামিনযুক্ত খাদ্য, চর্বি, প্রোটিন ইত্যাদির অভাবে কিম্বা রক্তশূন্যতা রোগে অনেকদিন ভুগলে লো-ব্লাড প্রেসার বলা হয়ে থাকে।
একজন ৪০ বছরের লোকের রক্তের চাপ হবে ৯০+৪০ বয়স = ১৩০ Systolic (সিস্টোলিক), Diastolic (ডায়াস্টোলিক) হবে ৭৫/৮০। কিন্তু ঐ লোকের Systolic চাপ ৯০ হইলে এবং Diastolic ৬০ -এর নীচে হইলে তাকে অতি নিম্নচাপ ধরতে হবে। অতি নিম্নচাপের ফলে দেহের সব Artery ও টিস্যুতে রক্ত পৌছায় না। ফলে ব্রেনে রক্ত পৌঁছায় না। ব্রেনে অক্সিজেন সরবরাহ কম হবার জন্য মাথা ঘুরতে থাকে। পরিশেষে রোগী অজ্ঞান হইয়া যায়।
আরো পড়ুন: উচ্চ রক্তচাপের লক্ষণ।
কতকগুলি রোগীর রোগের কারণেও লো-ব্লাড প্রেসার হয়ে থাকে। যেমন- রক্তহীনতা, বহুমূত্র, হুকওয়ার্ম, যক্ষ্মা ইত্যাদি। আবার ডায়ারিয়া, কলেরা, মৃদুজ্বর ইত্যাদি রোগে আক্রান্ত হলে বা রোগের পরে সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত লো-ব্লাড প্রেসার থাকতে পারে। প্রোটিনযুক্ত পরিমিত খাদ্য না খাবার জন্য বা পেটের অসুখে না খাবার জন্য লো- ব্লাড প্রেসার রোগীর রক্তশূন্যতা দেখা দিতে পারে।
আরো পড়ুন: ঔষধ বাদে উচ্চ রক্তচাপ কমানোর উপায়।
নিম্ন রক্তচাপের লক্ষণ
- রক্তশূন্যতা থাকতে পারে বা নাও পারে। চেহারা ফ্যাকাসে হয়, মাংসপেশী খুব ঢিলা হয়।
- শরীর দুর্বল বোধ হয়, স্মরণশক্তি কমে যায় ।
- মাথা ঘোরে বা মাথা ব্যথা করে।
- একটু পরিশ্রমে হাঁপাইয়া পড়ে এবং নাড়ীর গতি দ্রুত হয়। কখনও কখনও শ্বাসকষ্ট হয়।
- অনেকক্ষণ বসে থেকে দাঁড়াইলে চোখে অন্ধকার দেখা যায়, মাথা ঘোরে।
- রোগী অস্থির হয়-এই বোধ হয় হার্টফেইল করল।
- মনমরা ভাব, হজমশক্তি কমিয়া যাওয়া, নিদ্রাহীনতা প্রভৃতি লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
- এইসব কষ্ট এককভাবে থাকতে পারে বা কয়েকটি একসঙ্গে থাকতে পারে। আবার এইগুলি কষ্ট থাকলেও লো-ব্লাড প্রেসার নাও হতে পারে।
- কখনও বা কাজ করতে করতে মাথা ঘুরে যেতে পারে ও রোগী পড়িয়া অজ্ঞান হতে পারে।
- দেহের অস্বস্তি প্রায়ই দেখা যায়।
- মোট কথা লো-ব্লাড প্রেসার হয়েছে কিনা তা রক্তের চাপ মাপিয়া নির্ণয় করতে হয়।
নিম্ন রক্তচাপ হলে করণীয়।
- কারণ অনুসারে চিকিৎসা করতে হবে।
- পেটের সহ্য ক্ষমতা অনুসারে হরলিক্স, দুধ, অর্ধ সিদ্ধ ডিম, মাখন, ঘি, টাটকা মাছের ঝোল, কচি মুরগীর মাংস বা সুপ নিয়মিত খাওয়া উচিত। ঔষধের উপর নির্ভর না করে পুষ্টিকারক খাদ্য খেতে হবে।
- মাংসের কলিজা রক্ত সৃষ্টি করিতে সাহায্য করে ।
- নিম্ন রক্তচাপের সহিত অন্য রোগজড়িত থাকিলে বা পেটের গোন্ডগোল থাকিলে তাহার ভিন্ন চিকিৎসা করতে হবে। যেমনঃ কৃমি রোগ।
- ভিটামিন যুক্ত টাটকা ফলমূল বা ফলের রস খাওয়া ভাল, যে সবকিছুতে ভিটামিন পাওয়া যায়। যেমন-টমেটো, গাজর, পালং শাক, ফুলকপি, বাঁধা কপি, লাল শাক ইত্যাদি।
- মটর, ছোলা প্রভৃতি কিছু ভিজিয়ে নিয়মিত সকাল বেলা খাওয়া ভাল। সব সময় ঔষধের উপর নির্ভর না করে পুষ্টি বৃদ্ধির জন্য টাটকা ভাল খাবার উপকারী ।
- ফলের রস উপকারী হতে পারে।
- ঔষধের চেয়ে পুষ্টিকর খাবার প্রতি জোর দিতে হইবে।
আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url