স্ক্যাবিস চুলকানি দূর করার উপায় ও ঔষধের নাম

স্ক্যাবিস্ শিশুদের ত্বকের যত সমস্যা হয়, তার মধ্যে 'স্ক্যাবিস্' অন্যতম। মায়েরা শিশুদের নিয়ে চিকিৎসকের কাছে প্রায়ই আসেন এ সমস্যার জন্যে। তাদের ভাষায় শিশুর চুলকানি বা পাঁচড়া হয়েছে। একটু খোঁজ নিলে দেখা যায়, শুধু শিশুরই নয়, মায়ের নিজের এবং পরিবারের অন্যান্যদেরও এই চুলকানির সমস্যা আছে। 'স্ক্যাবিস্' একটা সাংঘাতিক ছোঁয়াচে রোগ।  একজনের হলে পরিবারের অন্যদের মধ্যে খুব দ্রুত তা ছড়িয়ে পড়ে। সারকপটিস্ স্ক্যাবিই (Sarcoptes Scabei) নামক এক রকম পরজীবি এই স্ক্যাবিস্ রোগের জন্য দায়ী। এই পরজীবি শরীরে ঢুকলে মেয়ে পরজীবি ত্বকের নিচে টানেল বা নালা করে এগুতে থাকে এবং ডিম পাড়ে। কয়েক দিনের মধ্যে ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয় এবং এরা লোমকূপের গোড়ায় একত্রিত হয়। তখন ত্বকের উপর ছোট ছোট দানা বা প্যাপিউল হয়।

স্ক্যাবিস চুলকানি দূর করার উপায়

কি ভাবে বুঝা যাবে স্ক্যাবিস রোগ হয়েছে।

এই রোগের প্রধান উপসর্গ চুলকানি। সারা শরীর খুব চুলকায়, বিশেষ করে রাতে বিছানায় অসম্ভব চুলকানি হয়। শরীরের নানা স্থানের ত্বকে দানা বা প্যাপিউল হয়। সাধারণতঃ আঙ্গুলের ফাঁকে, কবজির ভেতরের দিকে, কনুই এর আশে পাশে, বগলে, শিশুদের নাভির চারপার্শ্বে এবং জননাঙ্গের আশে পাশে, উরুতে পায়ে বেশি হয়। বড়দের মুখমণ্ডলে হয় না, কিন্তু শিশুদের মুখেও হতে পারে। চিকিৎসককে দেখিয়ে সঠিকভাবে রোগ নির্ণয় করতে হবে।

আরো পড়ুন: নবজাতক শিশুর যত্ন - শিশুর জন্মের পর প্রয়োজনীয় টিপস্

স্ক্যাবিস চুলকানি দূর করার উপায়

আপনার শিশুর এ ধরণের সমস্যায় আপনাকে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। চিকিৎসক আপনার শিশুকে পরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেবেন। এ রোগের চিকিৎসায় সাধারণতঃ 'বেঞ্জাইল বেঞ্জয়েট' বা এ জাতীয় লোশন গায়ে মাখার জন্য দেয়া হয়। এই লোশন বয়স ভেদে বিভিন্ন মাত্রায় ব্যবহার করতে হয়। পুরো চিকিৎসার সফলতা নির্ভর করে ওষুধ গায়ে মাখার সঠিক নিয়ম মানার উপরে। নিয়মগুলো নিম্নরূপঃ 

১। পরিবারের আক্রান্ত সবার একসাথে গায়ে মাখতে হবে। 

২। প্রথমে শিশুকে খুব ভাল করে গরম পানি ও সাবান দিয়ে গোসল করাতে হবে। 

৩। তারপর সারা গায়ে পা থেকে শুরু করে গলা পর্যন্ত মাখতে হবে। মুখ বাদ থাকবে।  

৪। এভাবে পরপর তিনদিন- প্রতিদিন একবার করে মাখতে হবে এবং এই তিনদিন গোসল করানো যাবে না। 

৫। চতুর্থ দিন গরম পানি, সাবান দিয়ে খুব ভাল করে গোসল করাতে হবে এবং গায়ের কাপড় চোপড় ও বিছানার চাদর, তোয়ালে সব গরম পানিতে ধুয়ে কড়া রোদে শুকাতে হবে অথবা ইস্ত্রি করতে হবে। রোগটি খুব বেশি রকম হলে, পুরোপরি সারিয়ে ফেলার জন্যে সাত দিন পর আবার তিনদিন গায়ে ঐ লোশন মাখতে হবে। এর সাথে এন্টিহিস্টামিন জাতীয় ওষুধও দেয়া হয় চুলকানি কমানোর জন্যে।

আরো পড়ুন: টিকাদান কর্মসূচী - নবজাতকের টিকার তালিকা

স্ক্যাবিস রোগের ঔষধের নাম হলো বেঞ্জাইল বেঞ্চয়েট । বেঞ্জাইল বেঞ্চয়েট ছাড়া অন্য কোন ঔষধ ব্যবহার করলে চিকিৎসক ব্যবহার বিধি বুঝিয়ে দিবেন। 

কিন্তু স্ক্যাবিস্ যদি সংক্রমিত অর্থাৎ ইনফেকটেড হয়, সে ক্ষেত্রে প্রথমে চিকিৎসক প্রয়োজনীয় এন্টিবায়োটিক দিয়ে চিকিৎসা করেন। ঘা বা পুঁজ শুকিয়ে গেলে গায়ে মাখার ওষুধ দেন। পুঁজ থাকলে কখনও গায়ে ওষুধ মাখবেন না। 

আরো পড়ুন: মুখে ব্রণ কমানোর উপায়

স্ক্যাবিস দূর করার ঘরোয়া উপায়

স্ক্যাবিস একটি ছোঁয়াচে রোগ। তাই রোগ প্রতিরোধ করার উপায় রোগাক্রান্ত রোগীর কাছ থেকে শিশুকে দূরে রাখা। পরিবারের একজনের হলে অন্যরা তার কাছ থেকে দূরে থাকবেন। একই বিছানায় থাকবেন না। আলাদা তোয়ালে ব্যবহার করতে হবে। তাছাড়া যে কোন ধরণের চর্ম রোগের হাত থেকে আপনার শিশুকে রক্ষার জন্যে তাকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url
https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEiRsv7n3slK-wJ6kBKngfhLNOPtVsNrO-2Z5gEgbPTGq6I_SJeP-7kpgTgWJz8VzcmRCDLjH9sPZXEj5aVCXm59B5tMjsSaknCTzxO5k9WV5peiAATvHQcW5d7I5Ts7CafA6FpzeT1ncH7cbz_iSAq3jLhnHuDaKmUhATV3lUqN4fKe9IXYk3pzWfZMHNo/s320/NATURAL-Health-Supplement.jpg