শিশুর ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা হলে করণীয়

ডায়রিয়া বলতে বুঝায় বারবার পাতলা পায়খানা হওয়া। পাতলা পায়খানা হলে করণীয় বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার মতে, কারও পায়খানা যদি পাতলা হয়, যা কোন পাত্রে রাখলে ঐ পাত্রের আকার ধারণ করে (অর্থাৎ তরল হয়), এবং ২৪ ঘন্টায় তিন বা ততোধিক বার করে তাকে ডায়রিয়া বলা হয়। তবে কারও কারও মতে, দিনে (অর্থাৎ ২৪ ঘন্টায়) একবার করলেও পায়খানা যদি পাতলা পানির মত এবং পরিমাণে অনেক বেশি হয় সেক্ষেত্রেও তাকে ডায়রিয়া বলা যায়-যা ঐ ব্যক্তির পক্ষে অস্বাভাবিক।" যে কারো ডায়রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও সাধারণতঃ শিশুদের উপরই এর প্রকোপ বেশি দেখা দেয়। চার মাস থেকে তিন বছর বয়সের শিশুরাই এ রোগে বেশি ভোগে। বিশেষতঃ যারা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বাস করে বা থাকে, তারাই সাধারণতঃ এ রোগে বেশি ভোগে।

পাতলা পায়খানা হলে করণীয়

পাতলা পায়খানা হলে করণীয় কি

ডায়রিয়া হয়েছে বুঝলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন। ডায়রিয়া চিকিৎসার মূলনীতি হচ্ছে- 

১। শরীর থেকে যতটা লবণ ও পানি বেরিয়ে যাচ্ছে তা পূরণ করা এবং যে কারণে ডায়রিয়া হয়েছে তার চিকিৎসা করা।

২। শরীরের পুষ্টি রক্ষা করা এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা দেয়া।

৩। চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার পূর্বেই স্যালাইন খাওয়ানো শুরু করবেন। যতবার পাতলা পায়খানা বা বমি হবে, ততবারই সমপরিমাণ খাওয়ার স্যালাইন খাওয়াবেন।

আরো পড়ুন: শিশুদের হাম হলে কি করনীয় ও যে চিকিৎসা নেওয়া প্রয়োজন। 

খাওয়ার স্যালাইনের পাশাপাশি মায়ের দুধসহ অন্যান্য খাবার শিশুকে খাওয়াবেন। চিকিৎসকের কাছে নিয়ে না যাওয়া পর্যন্ত শিশুকে গোছল করিয়ে বা মাথা ধূয়ে গা-হাত- পা স্পঞ্জ করে দেবেন। পরিষ্কার হালকা জামা-কাপড় পরাবেন। যে ঘরে শিহাে থাকবে সেই ঘরে যেন যথেষ্ট পরিমাণে আলো-বাতাস থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখবেয়ে এজন্য ঘরের দরজা জানালা খোলা রাখবেন। খেয়াল রাখবেন ঘরে যেন দুর্গন্ধ না হয়। ডায়রিয়ার সঙ্গে জ্বর হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ঔষধ (প্যারাসিটামল) খাওয়াবেন।

খাওয়ার স্যালাইন রোগীকে ক'বার এবং কতটুকু খাওয়াতে হবে 

শরীর থেকে যে পরিমাণ পানি ও লবণ বের হয়ে যাচ্ছে, তা খাওয়ার স্যালাইন দিয়ে শরীরে ফিরিয়ে দেয়াই ডায়রিয়া রোগের সহজ চিকিৎসা। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ডায়রিয়া কেবলমাত্র খাওয়ার স্যালাইন দ্বারাই চিকিৎসা করা যায় এবং কোন ঔষধের প্রয়োজন হয় না। 

যতদিন পর্যন্ত ডায়রিয়া থাকে, ততদিন পর্যন্ত খাওয়ার স্যালাইন খাওয়াতে হবে এবং ডায়রিয়া ভাল না হওয়া পর্যন্ত পায়খানায় পানির পরিমাণ অনুযায়ী স্যালাইনের পরিমাণ বাড়াতে বা কমাতে হবে।

১ মাসের শিশুর পাতলা পায়খানা হলে করণীয়

১ মাসের শিশুর পাতলা পায়খানা হলে, নিচের পদক্ষেপগুলি অনুসরণ করুন:

  • বুকের দুধ পান : শিশুকে স্বাভাবিকভাবে বুকের দুধ পান চালিয়ে যান। মায়ের দুধে থাকা পুষ্টি ও অ্যান্টিবডি শিশুর সুস্থ হতে সাহায্য করে।
  • ফর্মুলা ফিডিং : যদি শিশুকে ফর্মুলা খাওয়ানো হয়, তবে স্বাভাবিকভাবে ফিডিং চালিয়ে যান। ফর্মুলার কারণে সমস্যা হচ্ছে বলে সন্দেহ হলে, চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করুন।
  • পানিশূন্যতার লক্ষণ পর্যবেক্ষণ করুন: - লক্ষণগুলি হলো শুকনো মুখ, কম ভেজা ডায়াপার, ক্লান্তি, এবং চোখের নিচে গভীরতা। এই লক্ষণগুলি দেখলে যত তাড়াতাড়ি সম্বব চিকিৎসা সহায়তা নিন।
  • ডায়াপার পরিবর্তন : ঘন ঘন পাতলা পায়খানা হলে ডায়াপার প্রায়ই পরিবর্তন করুন, স্থানটি পরিষ্কার ও শুকনো রাখুন।
  • ওষুধ এড়িয়ে চলুন: চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো ওষুধ শিশুকে দিবেন না।
  • শিশুর পাতলা পায়খানা লক্ষণগুলি নোট করুন: শিশুর পায়খানার ঘনত্ব, রঙ, এবং শিশুর অন্যান্য লক্ষণ যেমন জ্বর, বমি, বা অস্থিরতা লক্ষ্য রাখুন। এগুলি চিকিৎসকের কাছে তুলে ধরুন।
  • শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন: যদি পাতলা পায়খানা একদিনের বেশি স্থায়ী হয় বা শিশুর পানিশূন্যতার লক্ষণ দেখা দেয়, তবে তৎক্ষণাৎ শিশুকে  বিশেষজ্ঞ ডাক্তার এর সাথে যোগাযোগ করুন।

এ ধরনের ১ মাসের শিশুর পাতলা পায়খানা হলে কম বয়সী শিশুর জন্য পাতলা পায়খানা বিপজ্জনক হতে পারে, তাই সময়মতো চিকিৎসা নেয়া অতি গুরুত্বপূর্ণ।

২-৩  মাসের শিশুর পাতলা পায়খানা হলে করণীয়

২ মাসের শিশুর ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা হলে করণীয়, নিচের পদক্ষেপগুলি অনুসরণ করুন:

১ মাস, ২ মাস এবং ৩ মাসের শিশুর পাতলা পায়খানা হলে করণীয় গুলো সব একই আপনি ১ মাসের করণীয় গুলো ফলো করুন। ২ মাস বা ৩ মাস হলে যেমন আপনি শিশুর মায়ের দুধ পান স্বাভাবিক অবস্থায় যে ভাবে মায়ের দুধ পান করানো হয়েছিল ঠিক সেইরকম ভাবেই দুধ পান করানো যেতে পারে। এবং সেই সাথে যদি শিশুকে ফর্মুলা ফিডিং করানো হয়ে থাকে। তবে তা স্বাভাবিক ভাবে অনুসরণ করাই যথার্থ। কিন্তু, ডাক্তার এর পরামর্শ গ্রহণ করাই উত্তম। ১-৩ মাস অথবা ৪ মাস উভয় ক্ষেত্রেই করণীয় বা ঘরোয়া চিকিৎসা একই।

শিশুর ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা হলে যে খাবার খাবে

শিশু যদি মায়ের দুধ খায় তাহলে ডায়রিয়ার সময়ও তাকে মায়ের দুধই খাওয়ানো উচিত। চিকিৎসকের নির্দেশ ছাড়া কোন অবস্থাতেই মায়ের দুধ খাওয়ানো বন্ধ করা উচিত নয়। মনে রাখতে হবে, খাওয়ার স্যালাইন মায়ের দুধের কিংবা শিশুর অন্য খাবারের পরিবর্তে নয়। 

একটু বড় শিশু, যারা ভাত-মাছ বা অন্যান্য শক্ত খাবার খায় তাদেরও স্বাভাবিক খাবার খাওয়াতে হবে। এ সময়ে নরম ভাত (জাউ ভাত) বা নরম খিচুড়ি খাওয়ানো যেতে পারে। তা ছাড়াও পেঁপের তরকারী, কাঁচ কলার তরকারী মাছ-ভাতের সঙ্গে খাওয়ানো যেতে পারে। তবে যা-ই খেতে দেন না কেন, তা যেন শিশু পছন্দ করে বা নিজে থেকে খেতে চায়। অহেতুক জোর করে খাওয়াবেন না।

ডায়রিয়ায় শিশুর পানিশূন্যতা হলে কি করে বুঝা যাবে 

ডায়রিয়ায় পানিশূন্যতা হলে এবং সেই সাথে দ্রবীভূক্ত লবণজাতীয় উপাদান (Electrolytes) বেরিয়ে গেলে রোগীর যা যা হয় তা হলোঃ 

১। ঘন ঘন পিপাসা হয়, প্রস্রাব কমে যায় বা একেবারে বন্ধ হয়ে যায়। 

২। মুখ ও জিহ্বা শুকিয়ে যায়। চোখ কোটরে ঢুকে যায়। মাথার তালু বসে যায়। 

৩। কখনও কখনও হাত-পা নীলচে হয়ে যায়। 

81 শ্বাস-প্রশ্বাস দ্রুত হয়। শরীর খুব দুর্বল হয়ে যায়। নাড়ি (Pulse) খুব দ্রুত এবং ক্ষীণ হয়ে যায়।

৫। রোগী নিস্তেজ ও অসাড় হয়ে যায় এবং কখনও কখনও পেট ফুলে যায়।

৬। পানি শূন্যতা খুব বেশি হলে রোগী জ্ঞান হারিয়ে ফেলতে পারে। 

৭। পানি শূন্যতা বোঝার জন্য চিকিৎসক তাঁর দু' আঙ্গুল দিয়ে রোগীর শরীরের বা পেটের চামড়া টেনে ধরে পরীক্ষা করেন। এভাবে শরীরের চামড়া টেনে ছেড়ে দিলে দু'সেকেণ্ডের মধ্যে যদি পূর্বের মত না হয়ে কুঁচকে থাকে, তাহলে বুঝতে হবে রোগীর পানি শূন্যতা খুব বেশি। 

কি করে বুঝা যাবে রোগীর শরীরের পানি শূন্যতা কতখানি 

রোগীর শরীরে পানি শূন্যতা কতখানি তা তিন ভাগে ভাগ করা যায় যেমন- 

(ক) পানি শূন্যতা নেই বা পানি শূন্যতার লক্ষণ নেই (No sign of Dehydration)। 

(খ) মৃদু পানি শূন্যতা (Some Dehydration) এবং 

(গ) মারাত্মক পানিশূন্যতা (Severe Dehydration)। 

পানি শূন্যতার লক্ষণ নেই (No sign of Dehydration) :

১। রোগী পিপাসার্ত নয়। অন্যান্য দিনের মত রোগী স্বাভাবিকভাবে পানি পান করে। 

২। সজাগ। 

৩। নাড়ি এবং শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক। 

81 প্রস্রাবের পরিমাণ অন্যান্য দিনের মত স্বাভাবিক। 

৫। জিহ্বা ও মুখ শুকনো নয়। 

৬। চোখ স্বাভাবিক থাকে এবং কাঁদলে চোখে পানি আসে। 

৭। শরীরের চামড়া টেনে ছেড়ে দিলে দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যায়।

আরো পড়ুন: হুপিং কাশির লক্ষণ ও হুপিং কাশির প্রতিরোধের ঘরোয়া চিকিৎসা। 

মৃদু পানি শূন্যতা (Some Dehydration) :

১। শিশু পিপাসার্ত এবং অশান্ত হয়ে পড়বে। আর শান্ত থাকলেও ধরা বা ছোঁয়া মাত্রই চিৎকার করে উঠবে।

২। ছোট শিশুর মাথার তালু বসে যাবে।

৩। নাড়ি বা পালস্ দ্রুত হবে।

8 । চোখ কোটরে ঢুকে যাবে।

৫। মুখ ও জিহ্বা শুকিয়ে যাবে। 

৬। কাঁদলে চোখে পানি আসবে না। 

৭। প্রস্রাবের পরিমাণ অনেক কমে যাবে ও গাঢ় (হলুদাভ) রঙের হবে বা সাময়িকভাবে বন্ধ থাকতে পারে। 

৮। শরীরের চামড়া টেনে ছেড়ে দিলে ধীরে ধীরে পূর্বাবস্থায় যাবে অথবা বুড়ো মানুষের চামড়ার মত থুবড়ে থাকবে। 

মারাত্মক পানি শূন্যতা (Severe Dehydration) :

১। প্রায় মৃতের মত রোগী পড়ে থাকবে। 

২। চোখ কোটরের ভেতরে বেশ ঢুকে যাবে এবং শুকনো থাকবে। 

৩। জিহ্বা ও মুখ বেশ শুকনো থাকবে। 

8 । কাঁদলে চোখে পানি আসবে না। 

৫। রোগী ভীষণ পিপাসার্ত থাকবে। 

৬। বেশ অনেকক্ষণ প্রস্রাব হবে না। 

৭। নাড়ি অত্যন্ত দ্রুত এবং দুর্বল হবে, এমনকি নাড়ি না-ও পাওয়া যেতে পারে। 

৮। ছোট শিশুদের ক্ষেত্রে মাথার তালু অনেক ভেতরে ঢুকে যাবে। 

৯। শরীরের চামড়া টেনে ছেড়ে দিলে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যেতে দেরি হয়। 

খাওয়ার স্যালাইন খাওয়ানোর নিয়মাবলী 

১। পাতলা পায়খানা শুরু হওয়ার সাথে সাথেই খাওয়ার স্যালাইন খাওয়ানো শুরু করতে হবে। স্যালাইন খাওয়ানো শুরু করতে যত বেশি দেরি হবে রোগীর অবস্থা ততই খারাপ হবে। 

২। পাতলা পায়খানা ও বমির পরিমাণ মোটামুটি আন্দাজ করে কমপক্ষে সেই পরিমাণ স্যালাইন রোগীকে খাওয়াতে হবে। (শুরু করতে যদি দেরি হয়, তবে প্রথমে রোগীকে কিছু বেশি পরিমাণে স্যালাইন খাওয়াতে হবে।) 

৩। বমি হলেও স্যালাইন খাওয়ানো বন্ধ করা যাবে না। অল্প করে স্যালাইন কিছুক্ষণ পর পরই খাওয়াতে হবে।

8। যতদিন পর্যন্ত পাতলা পায়খানা চলতে থাকবে, ততদিন পর্যন্ত স্যালাইন খাওয়ানো চালিয়ে যেতে হবে। ৪৮ ঘন্টার বেশি সময় ডায়রিয়া চলতে থাকলে রোগীকে নিকটস্থ চিকিৎসা কেন্দ্রে নিতে হবে। 

৫। স্যালাইন খাওয়ানোর মাঝে, বিশেষ করে ছোট শিশুদেরকে, ফোটানো ঠাণ্ডা পানি খেতে দেয়া উচিত। ৬। মনে রাখবেন, খাওয়ার স্যালাইন কম খাওয়ানোর চেয়ে কিছুটা বেশি খাওয়ানো ভাল। 

৭। অল্প অল্প করে চামচ বা ঝিনুক দিয়ে শিশুদেরকে স্যালাইন খাওয়াতে হবে। শিশুকে শোয়া অবস্থায় পানি বা খাওয়ার স্যালাইন দেবেন না, নাকে মুখে উঠতে পারে। 

৮। একবার স্যালাইন তৈরির পর যদি ৮ ঘন্টার মধ্যে সবটুকু খাওয়ানো না হয় তাহলে বাকিটুকু ফেলে দিয়ে নতুন করে তৈরি করতে হবে। চালের গুঁড়োর স্যালাইন ১২ ঘন্টার বেশি রাখা যাবে না। 

৯। ডায়রিয়া চলাকালীন রোগীকে খাবার ও তার সাথে ডাবের পানি ও একটা দু'টা কলা খেতে দিলে ভাল হয়। 

১০। খাওয়ার স্যালাইনের প্যাকেট পাওয়া গেলে, প্যাকেটের গায়ে লেখা নিয়ম অনুযায়ী স্যালাইন বানাতে হবে। 

১১। খাওয়ার স্যালাইন খাওয়ানোর পরও যদি রোগীর অবস্থা খারাপ হয়, যেমন পেট ফাঁপা (অর্থাৎ ফুলে যাওয়া), প্রস্রাব কমে যাওয়া বা বন্ধ হওয়া, নিস্তেজ হয়ে পড়া, কষ্ট বা হাত-পা খিচুনি ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে রোগীকে নিকটস্থ চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে। 

খাওয়ার স্যালাইন 

রোগীকে যে ধরণের স্যালাইন খাওয়ানো যায়, তার মধ্যে চালের গুঁড়োর স্যালাইন, প্যাকেট স্যালাইন (ওরাল স্যারাইন) এবং লবণ গুড়ের স্যালাইন হলো উল্লেখযোগ্য। এসব স্যালাইন কিভাবে তৈরি করতে হবে তা নিম্নে বর্ণনা করা হলো। 

চালের গুঁড়োর স্যালাইন: একটি পরিষ্কার পাত্রে চা চামচে ৫ চামচ চালের গুঁড়ো নিন। চালের গুঁড়ো না থাকলে এক মুঠো চাল (আতপ বা সিদ্ধ) ১০/১৫ মিনিট পানিতে ভিজিয়ে তারপর পিষে নিন। (বাড়িতে মশলা পেষার শিল-নোড়া পরিষ্কার করে ধূয়ে নিবেন)। 

এবার চালের গুঁড়োকে আধা সের পানিতে ভালভাবে মিশিয়ে নিন। এখন আরও আধা কাপ পানি মেশান। জ্বাল দেয়ার সময় বাষ্প হয়ে কমে যায় বলে এ বাড়তি পানি মেশাতে হবে। এবার চালের গুঁড়ো মেশানো পানিকে উনুনে বা গ্যাসের চুলায় ৭ থেকে ১০ মিনিট জ্বাল দিন। জ্বাল দেয়ার সময় অনবরত নাড়তে থাকুন। ফুটে উঠলেই অর্থাৎ বুদবুদ দেখা দিলেই পাত্রটি নামিয়ে ফেলুন। তারপর ঠাণ্ডা করে এক চিমটি (এক চিমটি হচ্ছে বৃদ্ধাঙ্গুলি, তর্জনি এবং মধ্যমার প্রথম ভাঁজ পর্যন্ত) অথবা চা চামচে এক চামচের ৪ ভাগের এক ভাগ লবণ মেশাতে হবে। এ চালের স্যালাইন ১২ ঘন্টা রাখা যাবে। তারপর প্রয়োজনে পুনরায় স্যালাইন তৈরি করতে হবে। 

প্যাকেট স্যালাইন: বর্তমানে খাওয়ার স্যালাইন প্যাকেটে তৈরি অবস্থায় বাজারে কিনতে পাওয়া যায়। প্যাকেটের নির্দেশ অনুসারে এক বা আধা সের ফুটানো ঠাণ্ডা পানিতে এক

প্যাকেট স্যালাইন ভালভাবে মিশিয়ে খাওয়ার স্যালাইন তৈরি করা যায়। ফুটানো পানির পরিবর্তে টিউবওয়েলের পানিও ব্যবহার করা যায়। এই স্যালাইন ৮ ঘন্টার মধ্যে ব্যবহার করা উচিত।

লবণ-গুড়ের স্যালাইন: প্যাকেট স্যালাইন পাওয়া না গেলে বাড়িতেও খাওয়ার স্যালাইন তৈরি করা সম্ভব। আধা সের খাওয়ার পানির সাথে তিন আঙ্গুলের প্রথম দাগের সমান এক চিমটি লবণ ও এক মুঠো যে কোন ধরণের গুড় ভালভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। স্যালাইন তৈরির সময় লবণ, গুড় ও পানির পরিমাণ অবশ্যই ঠিক রাখতে হবে। গুড় না পেলে এক মুঠো চিনি ব্যবহার করা যাবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url