হুপিং কাশির লক্ষণ ও হুপিং কাশির প্রতিরোধের ঘরোয়া চিকিৎসা
ছোট্ট শিশুরাই সাধারণতঃ এ রোগে বেশি ভোগে। হুপিং কাশি একটি বিশেষ ধরণের সংক্রামক ব্যাধি। এই রোগের জীবাণুর নাম বরডেটেলা পারটুসিস।
হুপিং কাশির লক্ষণ বা উপসর্গের মধ্যে রয়েছে-
প্রথম সপ্তাহে রোগীর জ্বর হয়। কাশি (শুষ্ক কাশি) হয়। নাক দিয়ে পানি পড়ে। কাশির সাথে চোখ লাল হয়ে যায়। শুরুতে সাধারণ সর্দি-কাশির মতই হুপিং কাশি আরম্ভ হয়। প্রথম সপ্তাহে সাধারণ সর্দি-কাশি থেকে একে পৃথকীকরণ করা অনেকাংশে কষ্টকর। এ সময়ে রোগটা সবচেয়ে বেশি ছড়ায়।
দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে কাশি খুব মারাত্মক আকার ধারণ করে। কাশির ঝোঁকের সময় রোগী খুব জোরে জোরে ঘন ঘন কাশতে থাকে। কাশতে কাশতে তার চোখ মুখ লাল এবং পরে নীলাভ হয়ে যায়। তার নাক-মুখ ও চোখ হতে পানি পড়তে থাকে এবং দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। কাশতে কাশতে শেষের দিকে শব্দ (হুপ-শব্দ) করে রোগী লম্বা শ্বাস গ্রহণ করে। প্রায়ই রোগী লম্বা শ্বাস গ্রহণ করে এবং কাশতে কাশতে বমি করে ফেলে।
আরও পড়ুন: শিশুদের হাম হলে কি করনীয়।
রোগী উত্তেজিত হলে, জিদ করলে, এমন কি খাওয়ার সময়েও ঝোঁকের কাশি দেখা দিতে পারে। রাতে ঘুমের মধ্যেও ঝোঁকের সঙ্গে কাশি উঠে ঘুম ভেঙ্গে যায়; ঝোঁক থেমে গেলে রোগী আবার ঘুমিয়ে পড়ে। এ রকমভাবে ৪ থেকে ৬ সপ্তাহ পর্যন্ত চলে। হুপিং কাশিতে খুব ছোট্ট শিশুরাই বেশি কষ্ট পায়। এতে তারা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে।
সাধারণতঃ এক মাস অতিক্রান্ত হলে কাশির তীব্রতা কমে। কোনও কোনও রোগীর ক্ষেত্রে দু'মাস পর্যন্ত এরকম কাশি চলতে পারে। কাশির তীব্রতা এবং সংখ্যা কিছু কমলেও আরও একমাস পর্যন্ত মাঝে মাঝেই এর অস্তিত্ব প্রকাশ পায়। শিশু যখন আরোগ্যের পথে তখন যদি তার ঠাণ্ডা লেগে সাধারণ কাশি হয় তখন হুপিং কাশির প্রকোপও তীব্র হয়।
আরও পড়ুন: স্ক্যাবিস চুলকানি দূর করার উপায়।
হুপিং কাশির প্রতিরোধ ও ঘরোয়া চিকিৎসা
রোগ লক্ষণ দেখা দিলেই রোগীকে চিকিৎসা করাতে হবে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। তা ছাড়া রোগ লক্ষণ বা উপসর্গ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
যেমন-
- শ্বাস কষ্ট বা অক্সিজেনের অভাব হলে তাকে অক্সিজেন দিতে হবে।
- পুষ্টি যাতে ব্যহত না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
- প্রোটিন, ভিটামিন, মিনারেল সমৃদ্ধ খাবার শিশুকে বেশি করে খাওয়াতে হবে।
- চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী কাশি কমানোর ঔষধ দেয়া যাবে।
- ছোট্ট শিশুর কাশতে কাশতে তাদের দমবন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। তাই- শিশুর পরিচর্যা সাবধানে করতে হবে।
- কাশির সময় শিশুকে বিছানা থেকে কোলে তুলে নিতে হবে।
- এসময় শিশুর মাথা একটু নিচের দিকে রাখতে হবে এবং
- এক দফা কাশি না করা পর্যন্ত শিশুর পিঠে হাত বুলাতে হবে।
- রোগীকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে এবং খোলা-মেলা ঘরে তাকে রাখতে হবে।
- বমি হওয়ার পর স্যালাইন ও পানি খাওয়াতে হবে।
আরও পড়ুন: বাচ্চাদের নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার।
ভরা পেটে থাকলে বমির দরুণ শিশুর কষ্ট হবে তাই তাকে বার বার অল্প পরিমাণে খেতে দিলে তার সুবিধা হবে। এক দফা কাশি ও বমির পরই তাকে খাওয়ানো ভালো।
আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url