বঙ্গবন্ধুর জীবনী বাংলা রচনা -২০২৩ | বঙ্গবন্ধুর জীবনী

বাংলার স্বাধীনতার মহানায়ক বঙ্গবন্ধুর জীবনী বাংলা রচনা এই পর্বে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান 'র  জীবনী রচনা আকারে উপস্থান করা হল।বাংলাদেশের জন্ম যার জন্য যার নেতত্বে আজ আমাদের এই বাংলাদেশ একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে বিশ্বের ভুকে নাম লিখিয়েছে তার এই নেতৃত্ব তার জন্ম শৈশবকাল ,শিক্ষাজীবন ,রাজনৈতিক জীবন সহ আমাদের এই বঙ্গবন্ধুর জীবনী বাংলা রচনা টি উপস্থাপন করা হয়েছে নিচে পড়ুন।

বঙ্গবন্ধুর জীবনী বাংলা রচনা | বঙ্গবন্ধুর জীবনী

বঙ্গবন্ধুর জীবনী বাংলা রচনা | বঙ্গবন্ধুর জীবনী সম্পর্কে জানুন

ভূমিকা: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একজন বরেণ্য রাজনীতিবিদ ছিলেন। দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য তিনি সারা জীবনের সুখ শান্তি বিসর্জন দিয়েছেন। বাঙালি জাতীয়তাবোধে উদ্বুদ্ধ করেছেন এবং তার ফলশ্রুতিতে এসেছে আমাদের স্বাধীনতা। 

জন্ম: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালের ১৭ ই মার্চ গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তার পিতা লুৎফর রহমান ছিলেন একজন সরকারি কর্মচারী। 

শিক্ষা : গ্রামের পাঠশালায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শিক্ষা জীবনের সূচনা হয়। এরপর তিনি গোপালগঞ্জ মিশন স্কুলে ভর্তি হন স্কুল থেকে তিনি ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেন ১৯৪৭ সালে তিনি কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ছাত্র হিসেবে তিনি কিছুকাল পড়াশোনা করেন। 

রাজনীতিতে দীক্ষালাভ : তরুণ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব দেশকে ভালোবেসে ছিলেন। স্কুল-কলেজ জীবনী তার নেতৃত্বে লক্ষণ প্রকাশ পায়। তিনি সকলের কাছেই ছিলেন মুজিব ভাই। পাকিস্তান আন্দোলন কালে মুসলিম ছাত্র ফেডারেশনের নেতা হিসেবে তিনি যথেষ্ট অবদান রাখেন। তিনি বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুলের দেখেছিলেন বাংলার গৌরব নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, শেরে বাংলা এ.কে ফজলুল হক ,গণতন্ত্রের মানসপুত্র হোসেন শহীদ সোহরার্দী এবং মজলুম জননেতা মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীকে। এদের সবার কাছ থেকেই তিনি রাজনীতির দীক্ষা গ্রহণ করেন। 

সংগ্রাম জীবন ও নেতৃত্ব: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব তৎকালীন আওয়ামী মুসলিম লীগে যোগদান করেছিলেন। উক্ত দলের সভাপতি ছিলেন মাওলানা ভাসানী এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ছিলেন সাধারণ সম্পাদক। বাঙ্গালীর ন্যায্য পাওনা আদায়ের কথা বলতে গিয়ে তাঁকে বহু নির্যাতন ভোগ করতে হয়। তরুণ বয়সে তিনি একবার মন্ত্রিত্ব লাভ করেছিলেন ১৯৬৬ সালে তিনি বাঙালির জাতির মুক্তির সনদ বিখ্যাত ছয় দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন তখন ছিলেন তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতি। 

আগরতলা মামলা: পাকিস্তানের শাসক চক্র বাঙালি জাতিকে দাবিয়ে রাখার জন্য এদের জাতীয় চেতনাকে নস্যাৎ করার ষড়যন্ত্রে মেতে ওঠে। তারা বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ ছয় দফা কর্মসূচিকে অবৈধ ঘোষণা করে এবং এ আন্দোলনকে বিস্তৃত করা দেওয়ার লক্ষ্যে সর্বপ্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করে। তারা বাঙালি জাতির প্রাণপ্রিয় সংগ্রামী নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ এনে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আসামি হিসেবে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বন্দি হয়ে কারাগারে নিত হন তাকে মুক্তির লক্ষ্যে ১৯৬৯ সালের জানুয়ারি মাসে পূর্বপাকিস্তানে ঘটল গণ-অভ্যুত্থান। তখন বাধ্য হয়ে ষড়যন্ত্র মামলার আয়োজকরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। বাংলার মানুষ তাকে ভালবেসে "বঙ্গবন্ধু'" উপাধি দান করেন।

৭০-এর নির্বাচন ও আওয়ামী লীগের সংখ্যাগরিষ্ঠতা: ১৯৭০ সালে সমগ্র পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত নির্বাচনের পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ জাতীয় পরিষদের ১৬৯ টি  আসনের মধ্যে ১৬৭টি  আসনে বিজয়ী হয়ে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। পশ্চিম পাকিস্তান কোনো আসন  লাভ করেনি তদ্রূপ পাকিস্তান পিপলস পার্টি পশ্চিম পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। পূর্ব পাকিস্তানে আসন তারা পায়নি কিন্তু গোটা পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠতার বিচারে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের দাবিদার হয় তা সত্ত্বেও তৎকালীন পাকিস্তানের সামরিক প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ক্ষমতা হস্তান্তর করতে গড়িমসি শুরু করেন। 

পড়ুন : নিচে বঙ্গবন্ধুর জীবনী বাংলা রচনা 'র গুরুত্বপূর্ণ সংকেত গুলো অবশ্যেই পড়ুন। 

স্বাধীনতা ঘোষণা: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার সাথে আলোচনায় বসলেন, শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের পরামর্শ দিলেন। প্রেসিডেন্ট কিছু না বলে পাকিস্তান চলে গেলেন তার পর বঙ্গবন্ধু আন্দোলনে গতি বাড়িয়ে দিলেন ঐতিহাসিক 7 ই মার্চ রেসকোর্সের জনসমুদ্র জাতির জনক স্বাধীনতার সংগ্রাম এর বাণী ঘোষনা করেন। এবারের সংগ্রাম,, আমাদের মুক্তির সংগ্রাম,, এবারের সংগ্রাম,, স্বাধীনতার সংগ্রাম,,  জয় বাংলা। বঙ্গবন্ধু বাঙালিকে শৃঙ্খল মুক্তির আহবান জানিয়ে ঘোষণা করেন। প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলার জন্য আহ্বান জানান যার যা কিছু আছে সে সব কিছু নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে তিনি শত্রুর বিরুদ্ধে প্রস্তুতি আহ্বান জানান। সামরিক জান্তা এর জবাব এ ২৫  মার্চ কালো রাতে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর লেলিয়ে দেয়। পাকিস্তানের সেনাবাহিনী গ্রেফতার করল বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতারের পূর্বে তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা প্রদান করেন। বঙ্গবন্ধু নির্দেশে আওয়ামী লীগ অন্যান্য দেশ প্রেমিক ছাত্র-শিক্ষক , শ্রমিক-জনতা নিয়ে গড়ে তুললো মুক্তিবাহিনী।

মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু: স্বাধীনতার ঘোষণা দেবার অপরাধে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ২৫ মার্চ রাত বঙ্গবন্ধুকে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাসভবন থেকে গ্রেফতার করে।  তাদের সেনানিবাসে নিয়ে যায় ২৬ মার্চ গভীর রাতে তাকে বন্দী অবস্থায় পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয়। ঐদিন যে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে বঙ্গবন্ধু দেশ দ্রোহী বলে আখ্যায়িত করেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি সরকার গঠিত হয় বাংলাদেশ সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম ,উপ-রাষ্ট্রপতি অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি এবং তাজউদ্দিন আহমেদ প্রধানমন্ত্রী  নির্বাচিত হন। ৯ মাস যুদ্ধ শেষে ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় অর্জিত হয়। 

৪ জানুয়ারি পাকিস্তান সরকার আন্তর্জাতিক চাপে বঙ্গবন্ধু কে মুক্তি দেয়। তারপর তিনি জুলফিকার আলী ভুট্টোর সাথে সাক্ষাৎ করেন সেদিন বঙ্গবন্ধুকে ঢাকার উদ্দেশ্যে লন্ডনের পাঠানো হয়। লন্ডনে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ  হয় এবং বিমানবন্দরে ভারতের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বঙ্গবন্ধুকে স্বাগত জানান। ১০ জানুয়ারি ঢাকায় পৌঁছে পৌঁছালে তাকে অবিস্মরণীয় সংবর্ধনা জ্ঞাপন করেন। বঙ্গবন্ধু বিমানবন্দর থেকে সরকারি সরাসরি রেসকোর্স ময়দানে ঘোষণাপত্রে অশ্রুসিক্ত নয়নে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। ১২ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু এ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

উপসংহার: ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতার মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন। তিনি আজ আমাদের মাঝে নেই কিন্তু রয়েছে তার স্বপ্ন তিনি গণতন্ত্রের মাধ্যমে যে সোনার বাংলা গড়ে তোলার জন্য আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন সে স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে আমাদের এগিয়ে আসতে হবে।

আরো পড়ুন: স্বাধীনতার ৫০ বছর স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী রচনা  

বঙ্গবন্ধুর জীবনী বাংলা রচনা - দি ডেইলি লার্ন

আমাদের কথা, দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধ  করার পর আমরা পেয়েছি আমাদের এই স্বাধীনতা আর এই স্বাধীনতার বিজয়ের নায়ক আমাদের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এই বঙ্গবন্ধুর জীবনী বাংলা রচনা'য় তার আত্মজীবনী রচনা বা আত্মজীবনী জন্ম থেকে শৈশবকাল থেকে শুরু সব তথ্য উপরে তুলে ধরা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর পুরো জীবনী আমাদের জীবনে সাহস এবং মনে সাহস যোগাতে সাহায্য করে। যিনি দেশকে ভালোবেসে দেশের মানুষকে ভালোবেসে তার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে আন্দোলন ও সংগ্রামের কারণে করা বরণ করেছেন। এই পোস্টে বঙ্গবন্ধুর জীবনী বাংলা রচনা তুলে ধরা হয়েছে। আমাদের উচিত এই স্বাধীনতার মহানায়ক শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে জানা। তার জীবনী সম্পর্কে জানা। 
তাই বঙ্গবন্ধুর জীবনী বাংলা রচনা এই পর্বটি তার জন্য লেখা। এমন শিক্ষণীয় সব তথ্য পড়তে জানতে ফলো করুন দি ডেইলি লার্ন। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url