ইন্টারনেট রচনা। ইন্টারনেট ও আধুনিক প্রযুক্তি। শিক্ষায় ইন্টারনেট রচনা
আধুনিক শিক্ষায় ইন্টারনেট রচনা
- ইন্টারনেট [ঢা. ’১৫. '১০; রা. ১০, '১১; কু. '০৭; সি. '০৯, ১১; চ. '০১, ১২, য. ০১]
- ইন্টারনেট ও আধুনিক প্রযুক্তি
- ইন্টারনেট ও আজকের বিশ্ব আন্তঃযোগাযোগের মাধ্যম—
- ইন্টারনেট বিশ্ব যোগাযোগ ও ইন্টারনেট
- ইন্টারনেট : বিশ্বের সেতুবন্ধন [চ. '০৭]
ভূমিকা : আমাদের এই দৈনন্দিন গতিশীল ও ব্যস্ত জীবনকে ভালোবেসে উপভোগ করার জন্য যে সকল উপকরণ, সুযোগ- সুবিধা, জ্ঞান ও প্রযুক্তি থাকার প্রয়োজন এখন তা অনেকটা মানুষের নাগালের মধ্যে। আর ইন্টারনেট হলো বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রায় আধুনিক প্রযুক্তির সর্বশেষ সংস্করণ। স্যাটেলাইট প্রযুক্তির সাথে কম্পিউটারকে কাজে লাগিয়ে তথ্য আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে যে বিস্ময়কর অগ্রগতি সাধিত হয়েছে তাকে বলা হয় ‘ইন্টারনেট’। এর মাধ্যমে সারাবিশ্বকে এক গ্রন্থিতে গাঁথা সম্ভব হয়েছে। কাজেই ইন্টারনেট প্রযুক্তির মাধ্যমে মানুষের জীবনধারায় যে পরিবর্তন এসেছে তা রীতিমত ঈর্ষণীয়।
ইন্টারনেট কী?: ‘ইন্টারন্যাশনাল কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সার্ভিস' যা বর্তমানে ইন্টারনেট (Internet) নামে পরিচিত। নেটওয়ার্কভুক্ত কম্পিউটারসমূহকে অন্যান্য নেটওয়ার্কভুক্ত কম্পিউটারের সাথে নেটওয়ার্ক গড়ে তোলাই ইন্টারনেটের কাজ। নেটওয়ার্কসমূহ একত্রিত হয়ে পৃথিবীব্যাপী যে নেটওয়ার্কের সিস্টেম তৈরি করেছে তাকেই ‘ইন্টারনেট' বলে। তাই আমরা বলতে পারি, ইন্টারনেট হচ্ছে নেটওয়ার্কসমূহের নেটওয়ার্ক।
আরও পড়ুন : স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী রচনা।
ইন্টারনেটের প্রকারভেদ : ব্যবহারকারীগণ দু' ভাবে গ্রাহক হতে পারেন। একটি অন-লাইন ইন্টারনেটে। টেলিফোন লাইনের মাধ্যমে সরাসরি কম্পিউটারের ইন্টারনেটের মাধ্যমে অন্য যে কোনো সার্ভিস প্রভাইডারের সাথে যুক্ত করার পদ্ধতিকে অন-লাইন ইন্টারনেট বলে। তাতে ব্যবহারকারীগণ যে কোনো সময় অন্য যে কোনো প্রভাইডারের সাথে সম্পৃক্ত হতে পারে। এ ছাড়া IPACCES পদ্ধতিতে সরাসরি অন-লাইন ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত হওয়া যায়। কিন্তু এই পদ্ধতি ব্যয়বহুল। কাজেই সাধারণ গ্রাহকরা আগ্রহবোধ করে না।
দ্বিতীয়টি হলো অফ-লাইন ইন্টারনেট বা ই-মেইল। গ্রাহকগণ নিকটবর্তী কোনো সার্ভারকে মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করে বলেই এটাকে অফ-লাইন ইন্টারনেট বা ই-মেইল ইন্টারনেটের মাধ্যমে যোগাযোগ ও তথ্য আদান-প্রদান করতে পারে। এই তথ্য মাত্র কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে আদান-প্রদান করা যায়। এটি সামাজিক যোগাযোগের একটি অন্যতম মাধ্যম।
ইন্টারনেট তৈরির ইতিহাস : প্রতিযোগিতা দিয়ে শুরু হয় যে কোনো কাজের অগ্রগতি। আর তাই তখন আমেরিকা ও রাশিয়ার সমরবিদরা পারমাণবিক বোমার ভয়ে আতঙ্কিত থাকত। কারণ, যে কোনো সময় পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরিত হলে যোগাযোগ ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে যাবে। যার ফলে আবিষ্কার করা হয় ইন্টারনেট। মার্কিন সামরিক বাহিনী টেলিফোনের বিকল্প হিসেবে ইন্টারনেট ব্যবহার শুরু করেন। তারা বিশ্বব্যাপী নিজেদের অবস্থানগুলোর সাথে সার্বক্ষণিক গোপন যোগাযোগের জন্য ১৯৬৯ সালে প্রথম ইন্টারনেটের ব্যবহার শুরু করে। তখন এটি MILNET নামে পরিচিত ছিল। এই প্রযুক্তিকে আরো জনকল্যাণমুখী করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে দেয়া হলে তারা শিক্ষা গবেষণা এবং তথ্য আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব সাফল্য লাভ করেন। ১৯৮৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ‘ন্যাশনাল সায়েন্স ফাউন্ডেশন' সর্বসাধারণের জন্য একটি অন্য রকম যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু করেন। এর নাম দেয়া হয় ‘নেফনেট’। তিন বছরের মাথায় নেফনেট সমগ্র বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। ইতোমধ্যে আরো অনেক ছোট-বড় নেটওয়ার্ক গড়ে ওঠে। ফলে কিছুটা বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। তার জন্য নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করা হয় যাতে আর কোনো বিশৃঙ্খলা দেখা না যায়। ১৯৯০ সালে তাই গঠন করা হয় কেন্দ্রীয় নেটওয়ার্ক। আর বিশ্বের মানুষ পরিচিত হয়ে ওঠে ইন্টারনেটের সাথে। ১৯৯৩ সালের ১১ নভেম্বর বাংলাদেশে ইন্টারনেটের ব্যবস্থা চালু করা হয়। বর্তমান বিশ্বে প্রায় ২৪ হাজারের উপর নেটওয়ার্ক যুক্ত হয়েছে। এর ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ৩০ কোটির উপর (২০১২)।
আরও পড়ুন : বাংলাদেশের পর্যটন শিল্প রচনা।
ইন্টারনেটের প্রয়োজনীয় উপকরণ : ঘরে বা অফিসে বসে ইন্টারনেট চালাতে হলে চারটি জিনিসের প্রয়োজন— ১। কম্পিউটার : এটি তথ্যাদি টাইপ করতে সাহায্যে করে ও তার নিজস্ব মেমোরিতে রেখে দেয়। এরপর তা নেটওয়ার্কিং সফটওয়্যারের মাধ্যমে প্রাপকের কাছে তথ্যাদি পাঠানোর প্রাথমিক আয়োজন করে।
২। মডেম : এর পূর্ণ নাম Modulator / Demodulator। সাধারণ টেলিফোন লাইনের মাধ্যমে তথ্যাদিকে পাঠানোর উপযোগী করার জন্য এক কম্পিউটার হতে অপর কম্পিউটারে তথ্যাদিকে ডিজিটাল থেকে এনালগ আবার এনালগ থেকে ডিজিটালে রূপান্তরিত করার একটা ডিভাইস। মডেলের স্পীড-এর উপর তথ্যাদি কত দ্রুত প্রেরকের কাছে পৌঁছবে তা নির্ভর করে।
৩। টেলিফোন লাইন : টেলিফোন বা সেলুলার লাইন ছাড়া ইন্টারনেটের কোনো প্রক্রিয়াই সম্ভব নয়। লাইনের স্পীড-এর উপর তথ্যাদি দ্রুত স্থানান্তরিত হওয়া নির্ভর করে। এনালগের তুলনায় ডিজিটাল টেলিফোনে তথ্যাদি দুধ স্থানান্তরিত হয়।
আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url