গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ - গর্ভধারণের প্রাথমিক তথ্য
গর্ভাবস্থার প্রথম সপ্তাহ ও দ্বিতীয় সপ্তাহে গর্ভধারণের তেমন কোন গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ প্রকাশ পায় না। মায়েরা সাধারণত জানেন না যে তারা তাদের গর্ভাবস্থার প্রথম মাসে গর্ভবতী। পিরিয়ড মিস হওয়া প্রথম লক্ষণ যা গর্ভবতী মায়েরা সচেতন হন। একজন মহিলার গর্ভাবস্থা তার সাম্প্রতিক মাসিক চক্রের প্রথম দিনে শুরু হয়েছে বলে মনে করা হয়। এখানে গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ - গর্ভধারণের প্রাথমিক তথ্য রয়েছে ;
গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ
- বমি বমি ভাব বা বমন (Vomiting tendency)
- কোষ্ঠ কাঠিন্য (Constipation)
- বুক জ্বালা ও চুকা ঢেকুর উঠা (Heart burn and Acidity)
- পা ও হাত ফোলা (Oedema)
- সাদা স্রাব (White discharge)
- কোমর ব্যথা এবং হাঁটুর পিছনে ফুলিয়া যাওয়াঃ (Pain of Swelling of knee (behind)
- তলপেটে অতিরিক্ত ব্যথা (Lower Abdominal Pain)
- হঠাৎ পানি ভাঙ্গা (Leakage of Membrane)
- খিচুনী (Convulsion)
- গর্ভকালীন রক্তস্রাব (Uterine bleeding of Pregnant woman)
প্রথমবার গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ- গর্ভধারণের প্রাথমিক তথ্য
(ক) বমি বমি ভাব বা বমন (Vomitting tendency): সাধারণত ২/৩মাসে দেখা যায়। বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না। সকাল বেলায় সামান্য শুকনা খাবার যেমন-চিড়া, মুড়ি, বিস্কুট খাইলে মা সুস্থবোধ করেন। তবে অতিরিক্ত বমনের ফলে চোখ মুখ রসিয়া গেলে বা অস্থির হলে চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। ঘন ঘন বমি করলে গর্ভবতী অবস্থায় শরীর দুর্বল হয়ে যায়। এইক্ষেত্রে হালকা ও শুকনা খাবার দরকার।
(খ) কোষ্ঠ কাঠিন্য (Constipation): গর্ভবতী কালীন সময়ে এটা খুবই স্বাভাবিক প্রচুর পরিমাণে পানি ও অধিক পরিমাণে শাকসবজি খাইলে অনেক ক্ষেত্রে গর্ভবতী মায়ের কোষ্ঠ কাঠিন্য দূর হয়ে যায়।
তবে Milk of Magnasia (মিল্ক অব ম্যাগনেশিয়া) রাতে ঘুমানোর সময় ৪ চামুচ গরম জল সহ খাইলে অথবা ইসুবগুলের ভূসি ২ চামুচ রাত্রে পানিতে ভিজাইয়া সকালে সরবর্ত খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য থাকে না।
আরো পড়ুন: শরীর ফিট রাখার 10 টি উপায়।
(গ) বুক জ্বালা ও চুকা ঢেকুর উঠা (Heart burn and Acidity): গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ এর এটি একটি সাধারণ উপসর্গ হল বুক জ্বালা ও চুকা ঢেকুর উঠা। অতিরিক্ত মশলা যুক্ত খাবার ও ভাজা খাবার ত্যাগ করুন এতে উপকার পাওয়া যেতে পারে।
(ঘ) পা ও হাত ফোলা (Oedama): সাধারণত গর্ভের শেষ দুই মাসে পায়ে পানির ভাব দেখা দিতে পারে। স্বাভাবিক ভাবে ঘুমাইলে বা বিশ্রাম নেওয়ার ফলে কমে যায়। রাতে ঘুমানোর সময় বালিশে পা রাখিয়া ঘুমালেও উপকার পাওয়া যায়। অতিরিক্ত পা ফোলা বা তাহার সাথে শরীরের অন্য কোন অংশে ফোলা দেখা দিলে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ প্রয়োজন। এই লক্ষণটি সাধারণত একলামশিয়া রোগের পূর্ব লক্ষণ।
মনে রাখুন, এই লক্ষণটি সাধারণত গর্ভবর্তী মহিলার শরীর, হাত ও পা ফুলিয়া যাওয়া অত্যন্ত বিপদজনক লক্ষণ। জরুরী চিকিৎসার প্রয়োজন। অতিরিক্ত রক্তসল্পতা (হতে পারে) ও অপুষ্টি জনিত কারণে এটা দেখা যায় । শক্তিশালী রক্ত বর্ধক ও ভিটামিন ঔষধ বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করা যেতে পারে।
(ঙ) সাদা স্রাব (White discharge): গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ এর একটি সাধারণ লক্ষণ এটি। গর্ভকালীন সময়ে সাদা স্রাব স্বাভাবিক ভাবে একটু বেশী হয়। উপযুক্ত পরিচ্ছন্নতা রক্ষা করলে কোন অসুবিধা হয় না। কিন্তু দুর্গন্ধ বা অতিমাত্রায় হলে চিকিৎসার প্রয়োজন।
আরো পড়ুন: অর্শ বা পাইলস এর লক্ষণ ও ঘরোয়া চিকিৎসা।
(চ) কোমর ব্যথা এবং হাঁটুর পিছনে ফুলিয়া যাওয়াঃ (Pain of Swelling of knee (behind) joint: এটি সাধারণত গর্ভকালীন সময়ে প্রায়ই মহিলাদের থাকে যা গর্ভবতী মায়ের একটি লক্ষণ। বিশেষ কোন ব্যবস্থা নাই। বিশ্রাম ও ম্যাসেজ করলে কমে যায়। প্রসবের পর ইহা স্বাভাবিক ভাবে কমে যায়।
(ছ) তলপেটে অতিরিক্ত ব্যথা (Lower Abdominal Pain): প্রায়ই গর্ভবতী মহিলাদের তলপেটে অতিরিক্ত ব্যথা থাকে এটি স্বাভাবিক । তবে স্বাভাবিক অবস্থায় বিশ্রাম নিলে কমে যায়। না কমলে চিকিৎসার প্রয়োজন হয়।
(জ) হঠাৎ পানি ভাঙ্গা (Leakage of Membrane): অনেক সময় ভ্রণথলিতে ছিদ্র হয়। বিশ্রাম লইলে ঠিক হইয়া যায়। তবে জটিলতার সৃষ্টি হলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী হাসপাতালে ভর্তি করা যেতে পারে।
(ঝ) খিচুনী (Convulsion): অনেক ক্ষেত্রেই গর্ভবতী মায়েদের এটি থাকে। বিশেষ করে মানসিক আঘাত, হিষ্টিরিয়া রোগীদের প্রায়ই দেখা যায়। এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করা প্রয়োজন।
(ঞ) গর্ভকালীন রক্তস্রাব (Uterine bleeding of Pregnent woman): প্রতি মাসেই এই নিয়ম থাকলে বিশ্রামে ঠিক হয়ে যায়। তবে হঠাৎ রক্ত ক্ষরণ বা আঘাত জনিত কারণে হলে-জরুরী ভিত্তিতে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করা প্রয়োজন।
আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url