অর্শ বা পাইলস এর লক্ষণ ও ঘরোয়া চিকিৎসা

পাইলস এর লক্ষণ হল: রেকটামের বাহিরের ও ভিতরের শিরাগুলি ফুলে উঠে এবং শিরাতে ছোট মটরদানার মত বা তাহার চেয়ে একটু বড় যে (নখের ১ আঙ্গুলের মত) বলি হয়, এটার নাম অর্শ বা বুটি বা পাইলস। এই বলি এক বা একাধিক হতে পারে। এইটি দিয়ে পায়খানার সঙ্গে রক্ত পড়ে। এই পাইলস বা বলি কাহারও ভিতরে আবার কাহারও বাহিরে থাকে। শক্ত পায়খানার সময় জোরে কোঁথ দিলে এই বলি বাহিরে আসে। বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে আপনা আপনি পায়খানা শেষ হলে মলদ্বারের ভিতর চলে যায়। যাদের কোষ্ঠ কাঠিণ্য আছে তাদের এই রোগ হতে দেখা যায়। বহুবিধ কারণে এই রোগ হয় :-

  • হেপাটাইটিজ, যকৃতের গোলমাল, লিভারের পুরাতন রোগ বা সিরোসিস। 
  • দীর্ঘদিনের কোষ্ঠকাঠিন্য, পায়খানার সময় জোরে কোথ দেওয়া। 
  • দীর্ঘদিন যাবত আমাশয় রোগে ভোগা, মূত্রাশয়ের রোগ, রেনাল স্টোন। 
  • প্রস্টেট গ্রন্থির বেশী বৃদ্ধি।
  • বহুবিধ কারণে যকৃতে খুব বেশী রক্ত জমা বা যকৃতে ভারবোধ ।
  • পূর্ণ গর্ভাবস্থায় জরায়ুর উপর বেশী চাপ পড়া।
পাইলস এর লক্ষণ

অর্শ বা পাইলস রোগকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়-

  • অর্ন্তবলি
  • বর্হিবলি
  • মিশ্রিত বলি
অর্ন্তবলিঃ মলদ্বার (Rectum) হইতে ভিতরে ১ ইঞ্চি দূরে বলি হয়। সেখান থেকে রক্তপাত হয়।
বর্হিবলিঃ মলদ্বারের বাহিরে বলি হয় এবং ইহা হাত দ্বারা বুঝা যায়।
মিশ্র বলিঃ মলদ্বারের বাহিরে ও ভিতরে দুই স্থানেই বলি হয়।

অর্শ বা পাইলস এর লক্ষণ

  • অর্শ বা পাইলস বলি যতক্ষণ ভিতরে থাকে, তখন কোন রক্তপাত হয় না এবং লক্ষণও প্রকাশ পায় না।
  • অনেক সময় মলদ্বারের ভিতরে ভার বোধ হয় এবং পায়খানা করার পূর্বে এবং পরে জ্বালা বোধ হয়।
  • রক্তপাত হলে রোগ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়।
  • পায়খানার সংগে আগে বা পরে রক্তপাত হয়। কিন্তু ব্যথা হয় না। পায়খানা নরম হলে কোন রক্তপাত হয় না তবে কোষ্ঠকাঠিন্য হলেই রক্তপাত হয়।
  • রক্তপাত বেশী হলে রোগী রক্তহীন ও দুর্বল হয়।
  • রোগী পায়খানা করিতে ভয় পায়।
  • অর্শ বা পাইলস এর জটিল উপসর্গ
  • অতিরিক্ত রক্তপাতে মাথা ঘোরা, দুর্বলতা প্রভৃতি প্রকাশ পায়।
  • মলদ্বারে ফোড়া ও Septic হতে পারে।
  • অর্শ থেকে ভগন্দর হতে পারে।

অর্শ বা পাইলস এর রোগ নির্ণয়

  • বাহিরে বা ভিতরে বলি হতে পারে। 
  • পায়খানার সঙ্গে তাজা রক্ত-
  • পায়খানা নরম হলে রক্তপাত হয় না, কোষ্ঠকাঠিন্য হলে রক্তপাত হয়।

পাইলস এর চিকিৎসা

  • রোগ দমন ছাড়া চিরতরে আরোগ্য লাভ করার মত ঔষধ এ্যালোপ্যাথিক মতে আজ ও বাহির হয় নাই ৷
  • রোগ চিরতরে নির্মূল করার জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মাধ্যমে ঔষধ সেবন করুন। তবে, পাইলস থেকে চিরতরে মুক্তির উপায় এর জন্য অপারেশন করাই উত্তম চিকিৎসা।

পাইলস হলে কি কি খাওয়া নিষেধ

পাইলস হলে সাধারণত , গোস্ত, ইলিশ মাছ এবং অনন্য মাছ কম পরিমানে খাওয়া উত্তম তবে, যে কোনো গোশত এড়িয়ে চলাই উত্তম।

আরো পড়ুন: জন্ডিস এর লক্ষণ ও জন্ডিস হলে করনীয়

পাইলসের রক্ত পড়া বন্ধের জন্য করণীয় টিপস। 

যেকোনো ঔষধ গ্রহণের পূর্বে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার এর পরামশ গ্রহণ করা উত্তম।তবে, পাইলসের রক্ত পড়া বন্ধের জন্য আপনি ফার্মেসী দোকান থেকে ইসুবগুল প্লাস সংগ্রহ করে খেতে পারেন। পায়খানা নরম হয় এমন খাবার খাবেন। এটি কোষ্ঠকাঠিন্য হলে রক্তপাত বন্ধের একটি ভালো সংগ্রহ।  

পাইলস এর ঘরোয়া চিকিৎসা

পাইলস ঘরোয়া চিকিৎসার মাধ্যমে কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করা সম্বব। প্রতিদিন খাবার তালিকায় প্রচুর পরিমানে সবুজ শাকসবজি রাখুন। এবং গোস্ত, ইলিশ মাছ এবং অনন্য কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে এমন খাবার ও খাবার উপাদান ত্যাগ করুন। পায়খানা নরম হয় এমন খাবার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অন্তৰ্ভুক্ত করুন। 

আরো পড়ুন: শরীর ফিট রাখার 10 টি উপায়। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url