ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়ার কারণ ও প্রতিকার
ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়ার কারণ বা প্রস্রাব ধরে রাখতে না পারা : নিজের প্রয়োজন ও ইচ্ছা অনুযায়ী প্রস্রাব ধরে রাখতে পারেন না ১৫% মহিলা এবং ১০% পুরুষ, বয়স ৬৫র উপরে হলে এটা বেশি হয়। সামাজিক সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে যদিও বয়সের সাথে প্রস্রাবের রাস্তায় পরিবর্তনের জন্য এটা হয় তবে বয়স হলেই এটা হবে ধারণাটা সর্বক্ষেত্রে ঠিক নয়। তাই কারণ খুঁজতে হবে প্রতিকারের জন্য।
(ক) আর্জ ইকন্টিনেন্স- অর্থাৎ প্রস্রাব ধরলে সবুর করতে পারে না, কাপড় বা শরীর ভিজে ফেলে সাধারণ অর্থে মূত্রথলির মাংস পেশীর সমস্যায় এটা হয়। এন্টি মাসকেরিনিকস, সলিফেনাসিন, টলটেরডিন জাতীয় ঔষধে কাজ হয়; সাথে মূত্রথলির ট্রেনিং / ব্যায়ামও করতে হবে।
আরো পড়ুন: শরীর ফিট রাখার ১০টি উপায়।
(খ) স্টেস ইনকন্টিনেন্স মহিলাদের বেশি হয়, কাশি দিলেই প্রস্রাব হয়ে যায়। পেলভিক মাসল বা তলপেটের মাংসপেশির ব্যায়াম করতে হবে অর্থাৎ বাজারে গিয়ে প্রস্রাব ধরলে আমরা যেমন আটকিয়ে রাখার চেষ্টা করি এ রকম প্র্যাক্টিস করতে হবে। এস্ট্রোজন হরমোন কমে যাবার জন্য এট্রফিক ভেজাইনিটিস হয় এ বয়সে। হরমোন পেসারিজ দিয়ে ভ্যাজাইনাইটিসের চিকিৎসা করতে হয়।
(গ) ওভারফ্রোইনকন্টিন্সে প্রস্টেট বড় হবার জন্য বয়স্ক পুরুষের এটা হয়, প্রস্রাবের রাস্তার প্রতিবন্ধকতা সরাতে পারলে সমস্যার সমাধান হয়। স্ট্রোক বা ডিমেনসিয়া বয়স্ক লোকের মূত্রথলির উপরে কন্ট্রোল হারায়। সময় ঠিক করে প্রস্রাব করাতে পারলে হবে।
ওভারফ্লোইনকন্টিনেন্স ছাড়া ক্যাথেটার প্রাথমিক চিকিৎসা নয়। তবে শেষ ব্যবস্থা হিসেবে অবশ্যই লাগাতে হবে। তখন চামড়ার ক্ষতি হবে। ইনকন্টিনেন্সের জন্য জীবনের মান কমে যাবে। বেশী ঔষধ (পলি ফার্মেসি) বয়স বাড়ার সাথে অসুখের সংখ্যা ও ঔষধের সংখ্যা বাড়তে থাকে। চারটার বেশি লাগলে সেটা হোল পলিফার্মেসি।
আরো পড়ুন: পায়খানা ক্লিয়ার - কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ঘরোয়া উপায়।
সংগত কারণেই নিয়মিত পর্যালোচনা করতে হবে ঔষধ লাগবে কিনা, ডোজ পরিবর্তন করতে হবে কিনা। এটা করতে প্রেসক্রিপশন ঔষধ চাক্ষুস মিলিয়ে দেখতে হবে। অপ্রয়োজনীয় ঔষধ যেমন ৭০ এর পর রক্তনালির অসুখ ঠেকানোর (প্রোফাইল্যাক্টিক) জন্য স্টাটিন দেবার যুক্তি নেই, অশীতিপরদের বিসফসফনেট দিতে নাই। ননস্টেরয়ডাল এন্টিইনফ্লামেটরি ঔষধ বয়স্কদের বেলায় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বেশি করে। ঔষধ দরকার অথচ খাচ্ছে না অথবা নির্দেশ ছিল অথচ বন্ধ করেছে যার জন্য ইমার্জেন্সিতে এসেছে; ট্যাপারিং ডোজটা বোঝাতে হবে ভাল ভাবে। ঔষধ যে খায় যে দেয় দুজনাই বুঝলো কিনা নিশ্চিত হতে হবে।
ডাক্তারকে মনে রাখতে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ইনফেকশন, এনেমিয়া, অপুস্টির মত নৈমিত্তিক সমস্যার জন্য বয়স্কদের শারীরিক প্রতিক্রিয়া ভিন্ন। গতানুগতিক নয় বয়সভিত্তিক আর ব্যক্তিভিত্তিক হতে হবে প্রেসক্রিপশন ও পরিচর্যা। বয়স যাই হোক ওজন স্বাভাবিক রেখে ধূমপান পরিহার করে সুস্থ্য থাকতে পারে। সচল থাকার অভ্যেস করলে স্বাস্থ্যকর খাবার প্র্যাক্টিস করলে বিশ্বের ৪১% সুস্থ গ্রুপের হয়ে যাওয়া সম্ভব। বয়সের সাথে সংগতি রেখে সতর্ক হলে যে কেউ মোটামুটি আরো ২০ বছর ভালো থাকার আশা করতে পারে।
আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url